রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগাই বাকি ১১ মাস

প্রকাশিত: ১০:৪২ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২০
ফাইল ছবি

ধর্ম ডেস্ক: পবিত্র রমজান মাস চলে গেলো আমাদের মাঝ থেকে; রেখে গেলো তার মহান শিক্ষা। মাসব্যাপী রোজা পালনের পর ঈদের আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ।

রমজানের আমলভরা দিনগুলো বিদায় নেয়ার পর মুমিনের আমল তো এক দিনের জন্যও শেষ হওয়ার কথা নয়। যিনি রমজান মাসের মালিক, তিনি তো রমজান পরবর্তী বাকি মাসগুলোর ও মালিক। আল্লাহ তায়ালা- ‘আসমান জমিন সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধানে মাসগুলোর সংখ্যা হলো বার। তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস।’ (সূরা: আত ত্বাওবাহ, আয়াত: ৩৬)।

সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কর্তব্য হলো, তারা রমজান মাসে যেসব নেক আমলের অভ্যাস গঠন করেছে; সেই সব নেক কাজগুলো বন্ধ না করে নিয়মিত তা চালু রাখা। আল্লাহ বলেন, ‘মৃত্যু আসা অবধি তোমার প্রতিপালকের ইবাদাত করতে থাক।’ (সূরা: হিজর, আয়াত: ৯৯)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় আমল হচ্ছে ওই আমল, যা নিয়মিত করে যাওয়া হয়; যদিও বা তার পরিমাণ কম হয়।’ এ জন্য অন্য জায়গায় বিশ্বনবী বলেন, ‘তোমার ঈমানকে খাঁটি কর; অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে। সুতরাং নেক কাজ সামান্য সময়ের জন্য বন্ধ না করে নিয়মিতভাবে করা।

বিদায় নিল সবরের মাস, সংযমের মাস, ত্যাগের মাস। এই সবর, সংযম, ত্যাগ হচ্ছে মুমিনের সম্বল। বলাই বাহুল্য, এ মাসে মুসলমান অনেক প্রচেষ্টা ও শ্রম দিয়ে ইবাদত-বন্দেগি করেছে, তেমনি পরের মাসগুলোতেও যেন সেই প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম অব্যাহত থাকে। বান্দার আমল-আখলাক এমন হওয়া উচিত যে, সে যেন পবিত্র রমজান মাসই অতিবাহিত করছে।

রোজার মাস বিদায় নেয়ার পর যারা রমজানের মতো প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজসহ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, হালাল কাজ গ্রহণ এবং হারাম কাজকে বর্জণ করে। তবেই আল্লাহর পক্ষ থেকে রমজানের মতোই অবতীর্ণ হবে অফুরন্ত রহমত, বরকত, মাগফিরাত এবং নাজাত।

রমজান মাসে সব রোজাদারেরই নামাজ ও নেক আমলের প্রতি প্রচণ্ড ঝোঁক থাকে। রমজানের ইবাদাতের এ উৎসাহ প্রত্যেককেই ধরে রাখতে হবে। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করার চেষ্টা করা। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের ময়দানে সর্বপ্রথম নামাজেরই হিসেব নেয়া হবে। সুতরাং যার নামাজের হিসেব সঠিক হবে, তার অন্যান্য আমলও সঠিক বিবেচিত হবে। নচেৎ পরকালের বিপদের সীমা থাকবে না। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, আবু দাউদ)।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের অবস্থা যেন সেই নারীর মতো না হয়ে যায়, যে নিজ পরিশ্রমে সূতা কাটে এবং তারপর নিজেই তা ছিঁড়ে কুটি কুটি করে ফেলে।’ (সূরা: আন নাহল, আয়াত: ৯২)। অথ্যাৎ কোনো মুমিন ব্যক্তিই যেন রমজানের প্রচণ্ড পরিশ্রম ও ত্যাগের মাধ্যমে সিয়াম-সাধনার পর আবার যেন পূর্বের ন্যায় অন্যায় কাজে লিপ্ত না হই।

সুতরাং আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে উদাসিনতা পরিহার করার, পরকালের সফরের জন্য পথের সম্বল তৈরি করার, বছরের বাকি ১১ মাস রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ…