কমলগঞ্জ সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরস্থ ইউ কে গেষ্ট হাউজে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকায় কিশোর-কিশোরীকে এলাকাবাসি কর্তৃক আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৮ এপ্রিল) বেলা ১২টায় শমশেরনগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের এয়ারপোর্ট সড়কের ধারে অবস্থিত ইউ কে গেষ্ট হাউসে (সাবেক খাজা রেষ্ট হাউস) সিএনজিযোগে এক কিশোর কিশোরীকে নিয়ে আসে। বিষয়টি এলাকাবাসি টের পেয়ে ওই গেষ্ট হাউস ঘেরাও করে এবং কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশেকুল হককে মোবাইল ফোনে অবহিত করা হয়। খবর পেয়ে ইউএনও শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ী ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সেখানে পাঠান। পরে পুলিশ ফাঁড়ীর এস আই শাহ আলম তাদেরকে আটক করে পুলিশ ফাঁড়ীতে নিয়ে আসেন।
আটককৃতরা হলেন- কুলাউড়া উপজেলার হিংগাজিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে সুফিয়ান ও একই এলাকার আনিছ মিয়ার মেয়ে শারমিন আক্তার (১৭)।
বিষয়টির ব্যাপারে বুধবার দুপুরে মোবাইল ফোনে ইউএনও আশেকুল হক সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এসিল্যান্ড সেখানে যাবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। এর আগে ওই গেষ্ট হাউসের ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয় নাই।
ভাদাইরদেউল গ্রামের জনৈক সচেতন ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাবেক খাজা রেষ্ট হাউস বর্তমান ইউ কে গেষ্ট হাউসে কয়েক বছর যাবৎ অসামাজিক-অনৈতিক কাজ চলে আসছে। আমরা এলাকাবাসি স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফিজুল হক চৌধুরী স্বপন ও আজিজুর রহমান চৌধুরীসহ চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ ও প্রশাসনকে এই গেষ্ট হাউসের অসামাজিক কর্মকান্ড সম্পর্কে অবহিত করেছিলাম কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি! এখন আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি যাতে আমাদের শমশেরনগরের মান সম্মান বজায় থাকে।
শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, ইউএনও স্যার বলার পরে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই এবং এলাকার মানুষ তাদেরকে আটক করেছে। ইউ কে গেষ্ট হাউসে অসামাজিক কর্মকান্ডের বিষয়ে আমাকে কেউ অবগত করেনি।
৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হাফিজুল হক চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি ৫নং ওয়ার্ডের। তাছাড়া সম্ভবত শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ীতে সায়েম সাহেব থাকাকালীন ওই গেষ্ট হাউসের ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেছিলাম ও এলাকাবাসিকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য বলেছিলাম।
৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি জানি এখানে থাকার জায়গা।
ইউ কে গেষ্ট হাউসের অর্জুনের কাছ থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন জানিয়ে আটককৃত সুফিয়ান বলেন, আটককৃত শারমীন আমার স্ত্রী নয়।
ইউ কে গেষ্ট হাউসের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন বলেন, লকডাউন থাকায় সবাইকে ছুটি দিয়েছি। শুধু অর্জুনকে পরিঙ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য রাখা হয়েছে। আটককৃতরা (সুফিয়ান-শারমীন) গেষ্ট হাউসে আসলে অর্জৃন তাদেরকে একটি কক্ষে নিয়ে বসায়। পরে আমাকে সে ফোন দিয়ে জানালে তাদেরকে বের করে দেয়ার জন্য আমি বলি।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ী ইনচার্জ অরূপ কুমার চৌধুরী রাত প্রায় পৌনে নয়টায় বলেন, আটককৃতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে এবং তাদের অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।