আত্মঘাতী ব্যক্তির মরদেহ নিতে মর্গে হাজির ৭ স্ত্রী!

প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০১৯

ধলাই ডেস্ক: সংসারের টানাপোড়েনে বেঁচে থাকার আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন ৪০ বছর বয়সী পবন কুমার। যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই গাড়িচালক। রোববার আত্মহত্যা করতে বিষ খেয়েছিলেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পবনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্ত্রী।

কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। আর তারপরই শুরু হয় বিপত্তি। একের পর এক নারী এসে পবনকে নিজের স্বামী বলে দাবি করতে থাকেন। তাও আবার এক, দু’জন নন, সাতজন না নারী নিজেকেই পবনের স্ত্রী বলে দাবি করেন।

এমন পরিস্থিতিতে চোখ কপালে উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের। বহু চেষ্টার পরে পবন কুমারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হলেও এখনও এই ঘটনার কোনো মীমাংসা হয়নি। এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, পরিবার নিয়ে হরিদ্বারের রবিদাস বস্তি এলাকায় থাকতেন পেশায় গাড়িচালক পবন কুমার। গত রোববার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। কিছুক্ষণ পরে স্বামীকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্ত্রী। পুলিশকেও খবর দেয়া হয়। খবর পেয়েই হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছায় পুলিশ।

এদিকে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় পবনের। এরপরই তার স্ত্রীকে জেরা করেন পুলিশকর্মীরা। পবন কুমার কেন আত্মহত্যা করলেন তার কারণ জানতে চান। তার স্ত্রী জানান, পরিচিত লোকজনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন তার স্বামী। পাওনাদাররা ধার শোধের জন্য চাপ দিতেই চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। কীভাবে টাকা শোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন। এর মধ্যেই রোববার আচমকা বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। দেনা মেটাতে না পারার জন্যই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন তার স্ত্রী।

এরপরেই পবনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পবন কুমার বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে বলেই নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর মর্গ থেকে তার মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু, মর্গ থেকে মৃতদেহটি বের করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সময়ই বাধে বিপত্তি। আচমকা আরও চার নারী এসে পবন কুমার তাদের স্বামী বলে দাবি করতে থাকেন। বিষয়টি দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

ওই নারীদের জেরা করে পবন কুমারের সম্পর্কে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে। তবে কোনও নারীই জানতেন না যে পবন কুমারের সঙ্গে অন্য নারীদের সম্পর্ক ছিল। একে অপরকে চেনেন না বলেও জানান তারা। এই ঘটনার দু’দিন পর আরও দু’জন নারী হাসপাতালে এসে পবন তাদের স্বামী বলে দাবি করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, পবনের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। এতদিন যে বাড়িতে ভাড়া থাকতের সেখানকার ভাড়াও মেটাতে পারেননি তিনি। এমনও হতে পারে যে সাত নারীকে বিয়ে করে প্রচণ্ড চাপে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। সে কারণেই হয়তো আত্মহত্যা করেছেন।