কমলগঞ্জে চা বাগানে মানবন্ধন কে কেন্দ্র ২ গ্রুপে সংঘর্ষ আহত-৬ পুলিশি উপস্থিতিতে মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার: সমাজ সেবা অধিদপ্তর কর্তৃক চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নে পরিবার প্রতি ৫ হাজার টাকা করে সহায়তার চেক বিতরণের তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম উল্লেখ করে প্রতিবাদে মৌলভীবাজাররে কমলগঞ্জে সরকারী মালিকানাধীণ কুরমা চা বাগানে একদল চা শ্রমিক। কুরমা চা বাগান পঞ্চাযেত কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে আরও একদল শ্রমিক এ মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বাঁধার সৃষ্টি করলে দুই দল চা শ্রমিকের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উত্তেজনার এক পর্যায় দুই দল চা শ্রমিকের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ফলে ২ নারীসহ ৬ জন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সমাজ সেবা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদানকৃত চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের প্রকল্পে বরাদ্ধকৃত ৫ হাজার টাকা প্রনোদনা বিতরনের ১৯৮ জনের তালিকায় সুবিধা বঞ্চিত শ্রমিকদের অগ্রধিকার না দিয়ে চা বাগানের স্টাফ,ব্যবসায়ী,এক পরিবারের একাধিক ব্যক্তির নাম অর্ন্তভূক্ত করার অনিয়ম,স্বজনপ্রীতি দূর্নীতির প্রতিবাদে চা শ্রমিক নেত্রী গীতা রাণী কানুর নেতৃত্বে রবিবার সকাল ১১টায় উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের ন্যাশনাল টি কোম্পানীর কুরমা চা বাগান মাঠ লাইন এলাকায় তালিকায় বাদ পড়া সুবিধাবঞ্চিত চা শ্রমিকদের নিয়ে মানববন্ধনের ডাক দেন। এতে আপত্তি জানান একই চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি নারৎ পাশী ও তার অনুসারিরা। গীতা রানী কানুর অনুসারীরা মানববন্ধন করতে চাইলে বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতির অনুসারি সাদাত আলি, সাধু পাশি, সুরজান, গীতাদাশ. হারিছ মিয়া বাকবিতন্ডতায় জড়িয়ে এক পর্যায়ে গীতা রাণী কানুসহ মানববন্ধনে জড়ো হওয়া সুবিধাবঞ্চিত চা শ্রমিক নওশাদ মিয়া ,বাবুল কৈরী,কার্তিক পাল ও তার সহ ধমর্নী উষা পালের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে। ধাওয়ার কারনে মানববন্ধন পন্ড হয়ে যায়।
মানববন্ধন বিরোধীরা এক পর্যায়ে মানববন্ধনকারী গীতা রাণী কানুকে বাবুল কৈরীর দোকান গৃহে ১ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এই ঘটনার খবর বাগানে ছড়িয়ে পড়লে গীতা রানী কানুর অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নারৎ পাশীর অনুসারীদের ধাওয়া করে গীতা রানী কানুকে উদ্ধার করে। এই সময় উভয় পক্ষের লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে দুপুর ১ টায় মানববন্ধন অনুষ্টিত হয়।
গীতা রানী কানূ অভিযোগ করে বলেন. আমরা শান্তিপুর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন কালে হঠাৎ করে বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতির অনুসারিরা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আমাকে ১ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে লোকজন এগিয়ে আসলে তার (সভাপতির) লোকজন পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমরা ৩ জনকে আসামী করে কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। কুরমা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি নারদ পাশী বলেন, চা শ্রমিকদের ৫ হাজার টাকার তালিকায় কোন ভুল ছিল না। সঠিক মানুষের নাম তালিকায় রয়েছে। গীতা রানী কানু অহেতুক আন্দোলন শুরু করেছে। এতে দরিদ্র চা শ্রমিকরা পরবর্তীতে সমাজ সেবার প্রদত্ত ৫ হাজার টাকা না ও পেতে পারেন। তাই তিনিসহ সাধারণ চা শ্রমিকদের একটি অংশ মানববন্ধন কর্মসূচিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এখানে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি আর কেই আহত হয়নি।
কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান মানববন্ধণ নিয়ে কুরমা চা বাগানে দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাছাড়া গীতা রানী কানুর নেতৃত্বে চা শ্রমিকদের একটি পক্ষ মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনও চা বাগানে উত্তেজনা বিরাজ করছে।