স্টাফ রিপোর্টার: গত মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবারের ভারী বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘন্টায় তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ধলাই নদীর পানি কমে বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারী বর্ষণে পানি জমে কমলগঞ্জের কয়েকটি ইউনিযনের বেশ কিছু ফসলি জমি, বাড়িঘর ও রাস্তা নিমজ্জিত রয়েছে। শুক্রবার কমলগঞ্জের আদমপুর, ইসলামপুর, পতনউষার, শমশেরনগর ও মুন্সীবাজার ইউনিয়ন ঘুরে এ চিত্র পাওযা যায়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ধলাই রেল সেতু এলাকায় পানি বিপদ সীমার ১৮ দশমিক ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবার বিপদ সীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। শুক্রবার সাড়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় ধলাই রেল সেতু এলাকায় পানি বিপদ সীমার ১৮ দশমিক ৮৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন গত ২৪ ঘন্টায় তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ধলাই নদীর পানি অনেক কমে গেছে। এখন পানি বিপদ সীমার ১৮ দশমিক ৮৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মাধবপুর ইউনিয়নের শিমুলতলা এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ স্থান সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতায় আদমপুর, ইসলামপুর, শমশেরনগর, পতনউষার ও মুন্সীবাজার ইউনয়িনের বেশ কিছু এলাকার ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। অনেক বাড়িঘরও পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। কমলগঞ্জ-কুমরা সড়কের আদমপুরের আধকানি ও ইসলামপুর ইউনিয়নের গোলের হাওর এলাকার রাস্তা প্রায় ১ ফুট পরিমাণ পানিতে নিমজ্জিত আছে।
শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী, বড়চেগ, কুষ্ণপুর, হাজিনগর, সতিঝির গাঁও, রাধানগর ও মরাজানের পারের বেশ কিছু এলাকার ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। পতনউষার ইউনয়িনের কেওলার হাওর, ধোপাটিলা, শ্রীসূর্য, পতনউষার গ্রাম, মুন্সীবাজার ইউনয়নের রুপশপুর গ্রামের বেশ কিছু এলাকার ফসলি জমি জলাবদ্ধতার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারি সহকারি মাঠ কর্মকর্তা (এডি) পূর্ণ সিংহ জানান বৃহস্পতিবার পাহাড়ি ডলুয়া ছড়া, ইছা ছড়া, বাঘাছড়া ও লাউয়াছড়ার তীর উপচে আদমপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের পানি ফসলি জমিতে প্রবেশ করে জলাবন্ধতার সৃষ্টি করেছিল। অনেক স্থানের পানি এখন কমে গেছে। তবে জলাবদ্ধতার কারণে আদমপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের প্রায় ১৫০ হেক্টর ফসলি জমি এখনও নিমজ্জিত রয়েছে। তিনি আশাবাদী শুক্রবার রাতের মধ্যেই নিমজ্জিত জমি থেকে পানি নেমে যাবে।
শমশেরনগর ইউনয়িনের সতিঝির গাঁও-এর কৃষক সিদ্দিকুর রহমান, পতনউষারের কৃষক আনোয়ার খান ও তবারক হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতায় এ দুটি ইউনিয়নসহ মুন্সীবাজার ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩৫০ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। সব মিলিয়ে সারা উপজেলায় ৫০০ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত রয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, জলাবদ্ধতার করাণে ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত ছিল এখন পানি নামতে শুরু করেছে। শুক্রবার বিকাল ৪টায় আদমপুর ও ইসলামপুর ইউনয়িন এলাকা পরিদর্শনে যাবো। পরিদর্শণ শেষ করে কি পরিমাণ ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত তা বলা যাবে। এ মুহুর্তে সঠিক হিসাব দিতে পারছেন না বলে তিনি জানান।