কমলগঞ্জে ৩৬ দিন পর আঙিনায় পুঁতে রাখা গৃহবধূর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার ঃ ঘাতক স্বামী আটক

প্রকাশিত: ৫:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২১
ছবি ধলাইর ডাক

ধলাই ডেস্ক: ​মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজের ১ মাস ৬ দিন পর সুচিত্রা শব্দকর (৪০) নামে এক গৃহবধুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘাতক স্বামী সুবাস বাউরী ওরফে নুনু (৪৮) কে  আটক করে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ।

স্থানীয়রা জানায়, স্বামী পরিত্যক্তা সুচিত্রা শব্দকর (৪০) পাত্রখোলা চা বাগানের বাজারে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতো। সেই সুবাদে পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইন এলাকার  মৃত নিতাই বাউরীর ছেলে সুবাস বাউরী ওরফে নুনুর সাথে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠলে ১৩ বছর আগে সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর সংসার ভালো চললেও পরে দেখা দেয় পারিবারিক কলহ। প্রতিদিনই মদ্যপ অবস্থায় স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়াঝাটি হতো।
বুধবার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইন এলাকায় নিজ বাড়ির আঙিনার পাশে মাটি খুঁড়ে অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এই দম্পতির ঘরে এক ছেলে রয়েছে।
এদিকে গত ২২ শে জুন থেকে সুচত্রা নিখোঁজ ছিলেন। মাস খানেক থেকে মায়ের সাথে আগের স্বামীর মেয়ে সীমা শব্দকরের যোগাযোগ না হওয়ায় সৎ পিতা সুবাসের কাছে মায়ের খবর জানতে মুঠফোনে কল দিলে রহস্যজনক কথাবার্তা বলতো সুবাস।
মেয়ে সীমা শব্দকরের সন্দেহ হলে স্বামীর বাড়ি কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের তিলকপুর থেকে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সৎ পিতা সুবাস বাউরীর বাড়ি পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইনে আসে। প্রথম দিকে  সীমার কথার উত্তর না দিলেও পরের দিন  ২৮ জুলাই বুধবার সকালে সীমার  জেরার মুখে সুবাস একপর্যায় স্বীকার করে  ১ মাস পূর্বে তার মায়ের সাথে ঝগড়া হয়েছিল তাই সে রাগ করে  কুড়ালে হাতল দিয়ে আঘাত করলে সুচিত্রার মৃত্যু হয়। তাই সে ভয়ে লাশ গোপনের জন্য আঙিনার পাশে পুঁতে রেখেছে।
একথা শুনে সীমা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলে সুবাস পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে এলাকার লোকজনকে সাথে নিয়ে পাত্রখোলা জামে মসজিদ  এলাকা থেকে ঘাতক সৎ পিতা সুবাস কে আটক করে গাছের সাথে বেধে রেখে কমলগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয়।
ঘাতক সুবাস বাউরী জানায়, পারিবারিক কলেহের জেরে চলতি বছরের ২২ জুন সে তার স্ত্রী সুচিত্রাকে হত্যা করে বাড়ির আঙিনার পাশে পুঁতে রেখেছে।
খবর পেয়ে মৌলভীবাজার জেলার  সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি ( শ্রীমঙ্গল -কমলগঞ্জ) সার্কেল শহীদুল হক মুন্সির নেতৃত্বে কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান, ওসি তদন্ত সোহেল রানা, এসআই ফজলে এলাহী, মহাদেব বাছাড়,সুরুজআলী,মাহমুদ হাসান, উজ্জ্বল  মিয়া, এএসআই আনিছুর রহমান, মিজানুর রহমানসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যান। সেখানে আটককৃত ঘাতক সুবাস বাউরীর দেখানোমতে বাড়ীর আঙিনার পাশে পুঁতে রাখা গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহটি দুপুর দেড় টায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার মর্গে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় সীমা শব্দকর বাদি হয়ে সৎ পিতা সুবাস বাউরীকে আসামী করে কমলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছে।
কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্ত্রী হত্যার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে।