আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া দাবানল ক্রমেই ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করছে। দেশটির ওরেগন, ওয়াশিংটন ও ক্যালিফর্নিয়াসহ মোট ১২টি অঙ্গরাজ্যজুড়ে চলা এই দাবানলে প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ ও প্রাণহানীর সংখ্যা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে পড়া একশোটিরও বেশি দাবানলে এখন পর্যন্ত মোট ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে। অঙ্গরাজ্যটিতে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ওরেগনে ১০ জন এবং ওয়াশিংটনে একজন মারা গেছেন।
বাড়ি থেকে শেষ মুহূর্তে বেরোতে না পেরেই পুড়ে মারা গিয়েছেন অনেকে। কিন্তু মৃত্যুর থেকেও প্রশাসনকে এখন বেশি ভাবাচ্ছে নিখোঁজের সংখ্যা। ওরেগনে এখনো পর্যন্ত খোঁজ নেই বহু বাসিন্দার। ফলে মৃতের সংখ্যা আরো অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে টানা কয়েকদিনের আগুনে বাতাস বিষাক্ত হয়ে উঠেছে পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোর। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিতে পারছেন না বহু মানুষ। ওরেগনের বিভিন্ন এলাকায় দরজায় মোটা তোয়ালে ভিজিয়ে রেখে ধোঁয়া আটকাতে হচ্ছে।
পোর্টল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি শহরে মোট ৪০ হাজার মানুষকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে যেতে হয়েছে। গভর্নর কেট ব্রাউন জানিয়েছেন, যে কোনও সময়ে বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে আরো পাঁচ লাখ বাসিন্দাকে। কারণ রিভারসাইড এবং বিচি ক্রিকের আগুন একে অপরের দিকে এগোচ্ছে। দু’টি মিশে গেলে তার পরণতি ভয়াবহ হতে পারে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আগামীকাল ক্যালিফোর্নিয়া গিয়ে নিজে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত দু’দিনে সেখানে ৪ থেকে বেড়ে দাবানলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ২৮টি। ৪ হাজার ৩৭৫ বর্গ মাইল এলাকা জ্বলে পুড়ে নষ্ট হয়েছে সেখানে। মোট ১৬ হাজার দমকলকর্মী নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভাতে ব্যস্ত।
উদ্ধারকারী দলগুলো অবশ্য জানিয়েছে, দু’দিন আগে ক্যালিফোর্নিয়ায় আকাশে যে কমলা আভা দেখা দিয়েছিল, তার জেরে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়েছে। যা আগুন আয়ত্তে আনতে সাহায্য করছে অনেকখানি।
ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনসহ এই তিন প্রদেশের তিন ডেমোক্র্যাট গভর্নরই এই বিধ্বংসী দাবানলের জন্য বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘যা করার এখনই করতে হবে। এখন থেকে সতর্ক না হলে পশ্চিমাংশের মতোই অবস্থা হবে গোটা দেশের। প্রচুর পরিবার পথে এসে দাঁড়াবে।’