জ্বরে আক্রান্ত নববধূকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে এক সপ্তাহ ধর্ষণ করে শ্বশুর

প্রকাশিত: ৩:২০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০২১
ছবি সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: জ্বরে আক্রান্ত পুত্রবধূকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করেন শ্বশুর। এমনকি বিষয়টি জানাজানি হলে মীমাংসা করার জন্য ধর্ষণের শিকার পুত্রবধূকে বিয়েও করতে চান তিনি।

মঙ্গলবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা। এর আগে, একইদিন সকালে ধর্ষণে অভিযুক্ত শ্বশুর ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আদিতমারী উপজেলার উত্তর তালুকপলাশী গ্রামের মোকসুদার রহমান ও তার এক সহযোগী। মঙ্গলবার সকালে ঐ উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মহিষাশ্বহর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, উত্তর তালুকপলাশী গ্রামের মোকসুদার রহমানের ছেলে অটোচালক হাবিবুর রহমান তিন মাস আগে তার প্রতিবেশী এক তরুণীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে নববধূ শ্বশুর বাড়িতেই ছিলেন। তার স্বামী দিনের বেলা অটো চালাতেন, শাশুড়িও অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। এ অবস্থায় শ্বশুর ও পুত্রবধূ বাড়িতে থাকতেন। গত সপ্তাহে নববধূ জ্বরে আক্রান্ত হলে ওষুধ এনে দেন অভিযুক্ত শ্বশুর। ঐ সময় জ্বরের ওষুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে পুত্রবধূকে ধর্ষণ করেন তিনি।

আরো জানা গেছে, পরদিনও শ্বশুর কুপ্রস্তাব দেন পুত্রবধূকে। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করা হয়, চোখে আঘাত পান তিনি। ঐ অবস্থায় তাকে দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করেন শ্বশুর। এভাবে সপ্তাহব্যাপী ধর্ষণের শিকার হয়ে নববধূ বিষয়টি স্বামী ও শাশুড়িকে জানান। শুক্রবার ধর্ষণের শিকার স্বামী অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরে নিজ চোখে বাবার অপকর্ম দেখে ক্ষিপ্ত হন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নিজ বাড়িতেই প্রকাশ্যে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান অটোচালক ছেলে। ঐ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা জানান, ধর্ষণের শিকার নববধূর অভিযোগের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তদন্তে নামে পুলিশ। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি মহল ঐ নববধূকে জিম্মি করে রাখে। সোমবার জিম্মিদশা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে মহিষাশ্বহর গ্রামে বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা শ্বশুর ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো জানান, ধর্ষণের শিকার নববধূর দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী তার বাবা মঙ্গলবার চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঐ মামলায় অভিযুক্ত শ্বশুর ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। বাকি দুই আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।