ধলাই ডেস্ক: ‘বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না’, ‘ধূমপান করা নিষেধ’, ‘আপনি সিসিটিভির আওতায় আছেন’- বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গেলে সাধারণত এ জাতীয় নোটিশ চোখে পড়ে। কিন্তু ‘পেঁয়াজ চাইয়া লজ্জা দিবেন না’, এ রকম নোটিশ হয়তো এর আগে চোখে পড়েনি কারও। এমন একটি নোটিশ-ই সাঁটিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরের বাবুলাল দে নামের এক হোটেল মালিক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহরমপুরের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এলাকার ওই হোটেলে ঢুকলে ক্যাশ কাউন্টারের ঠিক পাশে এ নোটিশটি চোখে পড়বে। নোটিশটি দেখে অনেকেই বলছেন, ‘আগে হোটেলে ঢুকলে না চাইতেই নূন, পেঁয়াজ, লেবু, মরিচ হাজির হয়ে যেত। এজন্য কোনো অতিরিক্ত পয়সা দেয়া লাগত না। কিন্তু এখন এমন দিনও দেখতে হচ্ছে!’
হোটেলের মালিক বাবুলাল দে বলেন, ‘কী করব বলুন? গত সপ্তাহ থেকে পেঁয়াজ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। বুধবারও (৪ ডিসেম্বর) দিনও ১২০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনেছি। ফলে রান্নার কাজে ছাড়া পেঁয়াজ দেয়া যাচ্ছে না। তাই কেউ চাওয়ার আগেই নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়েছি।’
বহরমপুরের জাতীয় সড়ক লাগোয়া ওই হোটেলে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ লোক খাওয়া-দাওয়া করে। হোটেলটিতে রান্নার কাজে প্রতিদিন প্রায় ২৫ কেজি পেঁয়াজ লাগত। কিন্তু দাম বাড়তেই পেঁয়াজের ব্যবহার এখন ৮ কেজিতে নেমে এসেছে।
বাবুলাল বলেন, ‘গরম ভাতের থালায় কিংবা রুটির সঙ্গে এত দিন পেঁয়াজ, মরিচ, শসা দিতেই হতো। এখন শসা কিংবা মুলা দিয়ে দিচ্ছি। অনেকে এতে বিরক্ত হচ্ছেন। কিন্তু কিছু করার নেই।’
বাংলাদেশের বাজারের মতো ভারতেও পেঁয়াজের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। তাই বাবুলাল একা নন, তার মতো দেশটির সাধারণ মানুষ এখন পেঁয়াজের ঝাঁজে নাজেহাল।
বহরমপুর এলাকার আরেক হোটেল মালিক মনোজ সাহা বলেন, ‘আগে রান্নায় প্রতিদিন ২০ কেজি করে পেঁয়াজ লাগতো। কিন্তু পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে তা কমিয়ে ৭-৮ কেজিতে নামিয়ে এনেছি। কেউ পেঁয়াজ চাইলে মুলা ও মরিচ দিচ্ছি। অনেকের সঙ্গেই কথা কাটাকাটি হচ্ছে। ভাবছি আমরাও এবার নোটিশ সেঁটে দেব।’
শুধু হোটেল নয়, ঝালমুড়ির দোকানে গেলেও জানিয়ে দেয়া হচ্ছে, ‘চাইলে শসা দিতে পারি।’