
লাইফস্টাইল ডেস্ক: আর্দ্র আবহাওয়া মানে প্রচণ্ড গরমে সৃষ্ট ঘাম বা বর্ষাকালে ফাঙ্গাস মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই ত্বকে ফাঙ্গাসের সংক্রমণ নিয়ে পূর্ব সতর্কতা ও আক্রান্ত হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ এ রোগের চিকিৎসাকে করে তুলতে পারে সহজে নিরাময়যোগ্য। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক ত্বকের ফাঙ্গাল ইনফেকশন নিয়ে। কেন হয় পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশন?
> শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কিছু কারণ যেমন- কেমোথেরাপি, স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ গ্রহণ করা বা এইডসে আক্রান্ত হলে
>> নিয়মিতভাবে দীর্ঘক্ষণ শরীরের কোনো অঙ্গ ঘামে বা পানিতে ভেজা থাকলে
>> ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থাকলে
শরীরের কোথায় হতে পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশন?
ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা দাদ শরীরের যে কোনো জায়গায় হতে পারে। বিশেষ করে বিভিন্ন অঙ্গের ভাঁজে ও শরীরের যেসব জায়গা দিনের বেশিরভাগ সময় ঢাকা থাকে এমন জায়গায় বেশি দেখা যায়।
বিশেষ করে শরীরের কুঁচকি বা ভাজে, বগল, হাতের বা পায়ের দুই আঙুলের ফাঁকে, হাত বা পায়ের নখে দাদের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। এছাড়া মুখের ভেতরের তালুতে বা জিহ্বায় ও যৌনাঙ্গের আশেপাশেও ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে।
কি হলে বুঝবেন এটি ফাঙ্গাল ইনফেকশনের লক্ষণ?
শুরুতে শরীরে হঠাৎ ছোট ছোট দানার আকৃতি দেখা যায়। যেটি পরবর্তীতে লাল হয়ে গোলাকার অনেকটা পয়সার মতো আকার ধারণ করে। এই ছোট ছোট দানাগুলো ছড়িয়ে গিয়ে পরে আরো বড় দানার তৈরি করে। এর চারপাশে একটা বর্ডার বা সীমানা তৈরি হয় ও চুলকানির সৃষ্টি হয়।
সতর্কতা-
>> আর্দ্র আবহাওয়া মানে প্রচণ্ড গরমে সৃষ্ট ঘাম বা বর্ষাকালে ফাঙ্গাস মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই যতটা সম্ভব এ সময়টাতে শরীরের ভেজা স্থানগুলো শুষ্ক রাখতে হবে। ঘামে বা পানিতে ভেজা অংশ যত দ্রুত সম্ভব মুছে ফেলতে হবে।
>> দাদ বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন একটি ছোঁয়াচে রোগ। ঘরের কোন সদস্যের এটি হলে তার চিরুনি, বিছানা-বালিশ, তোয়ালে এরকম নিত্য ব্যবহার্য জিনিস থেকে অন্য সদস্যেরও হতে পারে। তাই দাদ থেকে মুক্ত থাকতে ঘরের প্রত্যেকের ব্যবহার্য সামগ্রী আলাদা থাকা উচিত।
>> অন্যের ব্যবহৃত গামছা, চিরুনি, মোজা বা জুতা ব্যবহার করবেন না।
>> ব্যবহৃত অন্তর্বাস নিয়মিত পরিবর্তন ও পরিষ্কার করুন।
>> ঢিলেঢালা ও সুতি কাপড় পরুন, যাতে ঘাম জমে শরীরের ভিতরে ফাঙ্গাস বা ছত্রাক আক্রমণ করতে না পারে।
>> ব্যবহৃত কাপড় রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিন।
>> আক্রান্ত স্থানে নখ বা ধারালো কিছু দিয়ে চুলকাবেন না।
>> ত্বকের যে কোনো সংক্রমণে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ কখনো গ্রহণ করবেন না। ডাক্তার যে ওষুধ যতদিন গ্রহণ করতে উপদেশ দিবেন তা পরিপূর্ণভাবে মেনে চলুন।
>> নিজে থেকে ওষুধ গ্রহণ বা চিকিৎসার মাঝখানে হঠাৎ ওষুধ গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া এর চিকিৎসাকে আরও কঠিন ও দীর্ঘমেয়াদি করে তুলতে পারে।
শরীরের অন্যন্য অঙ্গের মতো ত্বকের সুরক্ষার ব্যাপারেও আমাদের যত্নবান হতে হবে সবার। এই স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে ফাঙ্গাসের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।