লোহার খুঁটি দিয়ে যাতায়াতের সড়কটি বন্ধ করলো রেলবিভাগ: কমলগঞ্জে মানববন্ধন।

প্রকাশিত: ৮:১৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫

ধলাই ডেস্ক: সিলেট-আখাউড়া রেলপথের মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বালিগাঁও এলাকায় ৫৩ বছর ধরে ৫টি গ্রামের মানুষজনের চলাচলকৃত সড়কটি দুই পাশে লোহার স্লিপার দিয়ে হঠাৎ করে বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগ। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার গ্রামবাসী। এ সড়কটি ব্যবহার করেই মানুষজন উপজেলা সদরে নিয়মিত আসা যাওয়া করতেন। সড়কটি বন্ধ করায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।

সড়কটি খুলে দেয়ার দাবীতে শতাধিক গ্রামবাসী শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় ভানুগাছ রেলস্টেশন সংলগ্ন বালিগাঁও এলাকায় মানববন্ধন করেছেন।
স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাঘমারা, রাজটিলা,বালিগাঁওসহ ৫ টি গ্রামের  মানুষ  সিলেট টু আখাউড়া রেলপথ ক্রসিং এর সড়কটি ব্যবহার করে আসছেন।

শ্রীমঙ্গল টু কমলগঞ্জ প্রধান সড়কে রাস্তাটি সংযোগ রয়েছে। উপজেলা সদরে সহজেই আসা যাওয়া করা যায় সড়কটি দিয়ে। রেলওয়ে বিভাগের কাছে স্থানীয়রা দীর্ঘ দিন ধরে এখানে গেইটম্যান দেয়ার দাবী জানিয়ে আসছেন। রেলক্রসিং এর পাশেই এখানে গরমশাহ মাজার, একটি মসজিদ রয়েছে। সরকারী রাস্তটি পাকাকরণ করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি শত শত মানুষ সিএনজি, মোটর সাইকেল, টমটম দিয়ে আসা যাওয়া করেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত তিনদিন আগে গ্রামবাসী  সকালে দেখতে পান রেলপথের দুই পাশে ৫টি করে ১০ টি লোহার স্লিপারের খুঁটি স্থাপন করে সড়কটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সড়কটি বন্ধ করায় বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার গ্রামবাসী। রেলপথের পূর্ব পাশে গ্রামের কবর স্থান রয়েছে। লাশ বহন করা কঠিন হয়ে পড়বে। বর্তমানে গ্রামের লোকজন বিকল্প পথে প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ ফাঁড়ি দিয়ে সিএনজি বা টমটমে ভানুগাছসহ উপজেলা সদরে যাতায়াত করছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, উচ্চ মহলে যোগাযোগ করতে। গত ৩  দিন ধরে সড়কটি বন্ধ রয়েছে। স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পায়ে হেঁটে আসা যাওয়া করছেন। চরম দুভোর্গে পড়া গ্রামবাসী সড়কটি খুলে দেয়ার দাবীতে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুম্মার নামাজের পর শতাধিক গ্রামবাসী মানববন্ধন করেছেন। বালিগাঁও-বাঘমারা- রাজটিলা গ্রামবাসীর ব্যানারে বালিগাঁহ শাহী ইদগাহ সংলগ্ন এলাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, এ সড়কটি বহু বছর ধরে ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা। সরকারও রাস্তাটি পাকাকরণ করেছে। আর এখানে রেলক্রসিং হলেও কোন দুঘর্টনা ঘটেনি। আমরা বহুবার রেলওযে বিভাগকে বলেছি এখানে গেইটম্যান দেয়ার জন্য। হঠাৎ করে কোন উদ্দেশ্যে এ রাস্তাটি বন্ধ করা হলো। অবিলম্বে রাস্তাটি খুলে দেয়ার জন্য স্খানীয় প্রশাসন ও রেলওয়ে কতৃর্পক্ষের কাছে আহবান জানান।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ভানুগাছ পৌর বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সহ সভাপতি কাজী মামুনুর রশীদ, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহবায়ক এম এ ওয়াহিদ রুলু বাঘমারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস শহীদ, মাওলানা আনোয়ার হোসেন, সমাজসেবক নোমান আহমদ প্রমুখ।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের প্রকোশলী (কার্য) কুলাউড়ার মো: জাকির হোসেন খান বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে যাত্রীদের স্বার্থে মাইজগাও হতে আখাউড়া পর্যন্ত অবৈধ রেলক্রসিং বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, স্থানীয়রা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন, আমি রেল বিভাগের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।