ধলাই ডেস্ক: কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলায় গত ৬ দিন ধরে নিখোঁজ গৃহবধূ আফরোজা বেগমের মরদেহ অবশেষে উদ্ধার হয়েছে। তাকে হত্যার পর মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল বলে ধারণা করছেন মহেশখালী থানার ওসি।
স্বামীর বাড়ির আঙিনার মাটি খুঁড়ে শনিবার (১৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন মহেশখালী থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল হাই।
ওসি বলেন, গত ১২ অক্টোবর শ্বশুরবাড়ি থেকে আফরোজা বেগম ‘নিখোঁজ’ হন। এ ঘটনায় তার বাবা মোহাম্মদ ইসহাক বাদী হয়ে রাকিব হাসান বাপ্পীকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
স্বজনদের পাশাপাশি পুলিশ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়েও আফরোজার সন্ধান পাচ্ছিল না। শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত নলবিলার আশপাশের পাহাড়ের পাদদেশে খোঁজা হয় আফরোজাকে। না পেয়ে পুলিশ চলে এলেও স্বামীর বাড়ির প্রতি নজর রাখতে গোয়েন্দা লাগানো হয়।
ওসি আরও বলেন, নয় মাস আগে রাকিবের সঙ্গে আফরোজার বিয়ে হয়। দু’জনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। আফরোজার প্রথম স্বামী মারা গেছেন। অন্যদিকে রাকিব হাসান বাপ্পী তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর আফরোজাকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকে বাপ্পীর সঙ্গে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর আবারও সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে আফরোজা ও বাপ্পীর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।
আব্দুল হাই জানান, আফরোজার ওপর রাকিব অমানবিক নির্যাতন চালাতেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। এ নিয়ে আগেও গ্রামে সালিশ হয়েছে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, এক বছর আগে বাপ্পির সঙ্গে আফরোজার বিয়ে হয়। এটি আফরোজার তৃতীয় এবং বাপ্পীর চতুর্থ বিয়ে। বিয়ের পর তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে ধরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা পর্যন্ত গড়ায়।
অবশেষে কিছুদিন আগে মামলায় আপোষের সূত্র ধরে বাপ্পি আফরোজাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। গত ১২ অক্টোবর আফরোজা নিখোঁজ হয়েছে বলে শাশুড়ি রোকেয়া হাসান আফরোজার বাবার বাড়িতে খবর দেন। সেই থেকে আফরোজা নিখোঁজ ছিলেন।
একই দিন থেকে স্বামী রাকিব হাসান বাপ্পীও পলাতক ছিলেন। পরবর্তীতে ১৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে মহেশখালী থানা পুলিশের সহায়তায় বাড়ির আঙিনায় মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় আফরোজার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ময়নাতদন্তের জন্য আফরোজার মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওসি।