২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
Logo

অনশনে বসেছেন রাজশাহী-নরসিংদী-খুলনার পাটকল শ্রমিকরা

প্রকাশিত: ৫:৪৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০১৯

ধলাই ডেস্ক: ১১ দফা দাবি আদায়ে বুধবার সকাল থেকে অনশনে বসেছেন রাজশাহী, নরসিংদী ও খুলনার পাটকল শ্রমিকরা। ৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি দিয়ে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

সকাল ৮টা থেকে নগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালীতে মিলগেটে শ্রমিকরা অনশনে বসেন। কাজ বাদ দিয়ে ১১ দফা দাবিতে শ্রমিকদের এ অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এর আগে দাবি আদায়ে সোমবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন পাটকল শ্রমিকরা।

প্রতীকী অনশনের পাশাপাশি চলবে সমাবেশও। সেখান থেকে জাতীয় মঞ্জুরি কমিশন বাস্তবায়ন, সরকারি বেসরকারি অংশীদারির সিদ্ধান্ত বাতিল, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ গ্রাচ্যুইটির টাকাসহ শ্রমিকদের ঘোষিত ১১ দফা দাবির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখছেন শ্রমিক নেতারা।

রাজশাহী পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে উপস্থিত রয়েছেন রাজশাহী পাটকল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন, কোষাধ্যক্ষ মোস্তাক হোসেন, সহ-সভাপতি আব্দুল আলীম, মাসুদ রানা প্রমুখ।

 

মজুরি কমিশনসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে শ্রমিকদের পাশাপাশি কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের স্ত্রী ও তাদের শিশুসন্তানরাও এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি দিয়ে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেন ইউএমসি জুট মিল শ্রমিকরা।

 

অনশনে মিলে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শ্রমিকদের সহধর্মীণী ও শিশুসন্তানরা অংশ নেন। এসময় ‘ভাত দে, কাপড় দে নয়তো একটু বিষ দে’ স্লোগান দেয়া হয়। একই সঙ্গে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা করা হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পযর্ন্ত কর্মসূচি চলবে।

বাংলাদেশ পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদ আয়োজিত কর্মসূচিতে হাজারো শ্রমিক অংশ নেন। এসময় মিলের সব ধরনের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়।

 

এসময় বক্তারা বলেন, ঘরে চাল নেই, পেটে ভাত নেই। ক্ষুদার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আমাদের শিশুসন্তান ও সহধর্মীণীরাও অনশন কর্মসূচিতে যোগ দেন। দীর্ঘদিনেও বকেয়া মজুরি, পিএফ’র টাকা প্রদান ও বদলি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ, মজুরি কমিশনসহ ১১ দফা ন্যায্য দাবি না মানায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করে পাটমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন শ্রমিকরা। অচিরেই দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এসময় ইউএমসি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শফিকুল ইসলাম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, কাউছার আহাম্মেদ, সুমন খন্দকার, জাকির হোসেন, নন সিবিএ পরিষদের সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান, মোশারফ হোসেন, কাউয়ুম প্রধান, শামসুল আরেফিন, ইসা হাবিব রিপন সরকারসহ ঐক্য পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক আলমগীর হান্নান জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন।

মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের ডাকে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে নিজ নিজ পাটকলের সামনে শ্রমিকরা অনশন করেন।

 

পাটকল শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বাতিল, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের পিএফ গ্রাচ্যুইটির টাকা প্রদান, শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি নিয়মিত পরিশোধ, পাট মৌসুমে পাট ক্রয়ের অর্থ বরাদ্দসহ শ্রমিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ১১ দফা দাবিতে গত ১৭ নভেম্বর ছয়দিনের কর্মসূচির ঘোষণা করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদ।

সকালে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, দৌলতপুর , খালিশপুর, দিঘলিয়া, আলীম, ইস্টার্ন, কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিলের শ্রমিকরা কর্মস্থলে না গিয়ে নিজ নিজ মিল গেটে সমবেত হন। সেখানে শ্রমিকরা পৃথকভাবে মূল ফটকের সামনে অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেন এবং সমাবেশ করেন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল হামিদ সরদার, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন, প্লাটিনাম মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, খালিশপুর জুট মিল সিবিএ’র সভাপতি আবু দাউদ দ্বীন মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম শেখ প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে বিজেএমসি কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আহ্বান জানান।

সূত্র: জাগো নিউজ….