ধলাই ডেস্ক: স্ত্রী-সন্তানের কথা ভেবে বিদেশে পাড়ি জমান স্বামী। আর এ সুযোগে পরকীয়া প্রেমে মত্ত হয়ে আনন্দ ফুর্তিতে দিন কাটাচ্ছিলেন স্ত্রী। তাও আবার বহু বিয়ে পাগল যুবকের সঙ্গে। এখানেই শেষ নয়, প্রেমিকের সঙ্গে প্রায়ই রাত কাটাতেন এ গৃহবধূ। বিষয়টি এতদিন কেউ টের না পেলেও অবশেষে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা খেলেন তিনি।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার ধামরাই উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নে। আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা প্রথম স্বামীকে তালাক না দিয়েই পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসী। একসঙ্গে দুই স্বামী থাকার ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, স্ত্রী ও দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ সুখের কথা ভেবে কয়েক বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে যান গৃহবধূর স্বামী। এ সুযোগে একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম সাবুর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। সাবু এলাকায় ‘বহু বিয়ে পাগল’ নামে পরিচিত। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই প্রবাসীর বাড়ির দিকে নজরদারি বাড়িয়ে দেন আশপাশের লোকজন।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে প্রবাসীর বাড়িতে ঢোকেন প্রেমিক শফিকুল ইসলাম সাবু। এ সময় তারা গোপন অভিসারে মিলিত হন। একপর্যায়ে ঘরে ঢুকে প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন গ্রামবাসী। এরপর তাদের মারধর করে পৌর শহরের ইসলামপুর মহল্লা মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ও কাজী মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল আলীমকে ডেকে বিয়ে দেয়া হয়।
তবে রাষ্ট্র ও ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী আগের স্বামীকে তালাক না দিয়েই দ্বিতীয় বিয়ের এ কাবিন রেজিস্ট্রি ও বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।
এ ব্যাপারে শফিকুল ইসলাম সাবু পরকীয়া প্রেম ও শারীরিক মেলামেশার কথা স্বীকার করলেও বিয়ের বিষয়ে অসম্মতির কথা জানান। তিনি বলেন, আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসী। এ বিয়ে আমি মানি না। আমি গ্রামবাসীর বিচার চাই।
ওই গৃহবধূ জানান, প্রথম স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর সাবুর সঙ্গে প্রেমে জড়ান তিনি। সাবুকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে টালবাহানা করে শুধু সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। গ্রামবাসীর হাতে ধরা না খেলে তাকে বিয়ে না করে শুধু দেহই ভোগ করতেন সাবু। আল্লাহ যা করেন তা ভালোর জন্য করেন।
গ্রামবাসীরা জানান, স্বামী বিদেশে স্ত্রী-সন্তানের জন্য শরীরের ঘাম ঝরাচ্ছেন আর স্ত্রী পরকীয়ায় মত্ত হয়ে আনন্দ ফুর্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। তাই বিষয়টি সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি তারা। হাতেনাতে আপত্তিকর অবস্থায় তাদের আটক করে গ্রামবাসী মিলে বিয়ে পড়িয়ে দেন।
এ ব্যাপারে কাজী মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমাকে আগের স্বামী থাকার কথা গোপন রেখে কাবিন রেজিস্ট্রি ও বিয়ে সম্পন্ন করেছেন গ্রামবাসী। এ বিয়ে বৈধ নয়। আগের স্বামীকে তালাকের দিন থেকে তিন মাস ১৩ দিন ইদ্দত পালনের পর দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন একজন স্ত্রী। এছাড়া যদি তিনি আগেই বিয়ে করেন অথবা প্রথম স্বামীকে তালাক না দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তাহলে তা রাষ্ট্র ও মুসলিম পারিবারিক আইনবিরোধী। এক্ষেত্রে ঠিক তাই ঘটেছে।