ধলাই ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রলয়ঙ্করী সুপার সাইক্লোন আম্ফানের তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ৭২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়ে তিনি বলেছেন, শক্তিশালী এই ঝড়ে রাজ্যে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস, গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে।
বুধবার দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এই ঝড়ের তাণ্ডব চলেছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশ্যা রাজ্যে। ঝড়টির কেন্দ্রে পরিণত হওয়া পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, পানির নিচে তলিয়ে গেছে অনেক ঘরবাড়ি। রাস্তায় গাছের নিচে চাপা পড়ে পানিতে ডুবে আছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কলকাতা বিমানবন্দরের কিছু অংশ পানিতে ডুবে গেছে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার বিভিন্ন জেলা আম্ফানের আঘাতে একেবারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে আছড়ে পড়েছে আম্ফান। এটা কল্পনাও করা যায় না। আম্ফান এমন তাণ্ডব চালাবে তা আবহাওয়াবিদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা ধারণাও করতে পারেন নাই।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড়ের চোখ ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে কলকাতায় আছড়ে পড়ে। বুধবার দুপুর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে ঝড়ের কারণে ভারী বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। দুপুরের দিকে বাতাসের গতিবেগ ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার থাকলেও আঘাত হানার সময় ১৮০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়।
মমতা বলেছেন, আম্ফানের ক্ষয়ক্ষতি করোনাভাইরাস মহামারির চেয়েও মারাত্মক। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো ঘুরে দেখার জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পশ্চিমবঙ্গে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেত্রী বলেছেন, আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ করবো, দয়া করে এটা নিয়ে রাজনীতি করবেন না। সবকিছু পুনর্গঠনের জন্য আমরা মানবিক সহায়তা চাই।
আম্ফানে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে আড়াই লাখ রূপি করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা দিয়েছেন মমতা। আম্ফান যে তাণ্ডব চালিয়েছে তাতে এর ক্ষয়ক্ষতি বুঝতে ধ্বংসের চিত্র বুঝতে ১০ থেকে ১২ দিন লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আম্ফান পরবর্তী পুনর্গঠন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক হাজার কোটি রূপির তহবিল গঠন করেছেন মমতা।