আন্তর্তজাতিক ডেস্ক: ভারতে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের পর এবার উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। শুক্রবার প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সূচনা হলেও শনিবার তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এদিন রাজ্যজুড়ে অবরোধে পাঁচ ট্রেন ও ১৫ বাসে আগুন দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
মুর্শিদাবাদের লালগোলা স্টেশনে খালি পড়ে থাকা পাঁচটি ট্রেনে বিক্ষোভকারীরা আগুন দেয়। এছাড়াও মুর্শিদাবাদের পোড়াডাঙ্গা, জঙ্গিপুর ও ফারাক্কা স্টেশন এবং হাওড়ার বাউরিয়া ও নালপুর রেলস্টেশন অবরোধ করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যকে সংযোগকারী ন্যাশনাল হাইওয়ে ৩৪ অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। সড়কে চলতে গেলে বিক্ষোভকারীরা ১৫টি বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে তাতে আগুন দেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং গভর্নর জগদীপ ধনকর সহিংসতা বন্ধ করে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মমতা বলেন, দয়া করে রেল ও সড়কপথ বন্ধ করবেন না। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। যারা ভোগান্তি সৃষ্টি করছেন, বাসে আগুন দিচ্ছেন, জনগণের সম্পদের ক্ষতি করছেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
কাউকে আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় আহ্বান জানালেও তাতে কর্ণপাত করেনি বিক্ষোভকারীরা। বরং বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে অশান্তি, যা একপর্যায়ে অরাজকতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা রেলপথ ও সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর করে এবং বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেয়।
এদিকে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আসাম ও ত্রিপুরার অশান্ত পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। আসামের পত্রিকা যুগশঙ্খ জানায়, গতকালও গৌহাটিতে কারফিউ কয়েক ঘণ্টার জন্য শিথিল করা হলে পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও ব্যাপক লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। একই অবস্থা চলছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরা ও মেঘালয়েও। অশান্ত পরিস্থিতির জেরে অনির্দিষ্টকাল কারফিউয়ের পর শুক্রবার আসাম ও মেঘালয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকক্রাঞ্চ এ তথ্য জানিয়েছে।
এ বিষয়ে আসামের কর্মকর্তারা বলেছেন, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে গুজব এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এমন তথ্য, ছবি ও ভিডিও ছড়ানো হতে পারে- আশঙ্কায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। প্রতিবাদের আঁচ লেগেছে পূর্বাঞ্চলীয় অন্য দুই রাজ্য অরুণাচল ও নাগাল্যান্ডেও।