আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিক্ষোভের নামে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের তাণ্ডবে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পার্লামেন্ট ভবন অবরুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছিল সেখানে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, অধিবেশন চলার সময় হঠাৎ সেখানে তাণ্ডব শুরু করেন ট্রাম্প সমর্থকরা। ভাঙচুরের পাশাপাশি সেখানে গোলাগুলিও হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত একজন। সংঘর্ষের কারণে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারির নির্দেশ দিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র।
বুধবার কংগ্রেস অধিবেশনের বিরোধিতা করে ওয়াশিংটনে জড়ো হন কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক, যাদের মধ্যে উগ্রপন্থী বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরাও রয়েছেন। সেই সমাবেশে বক্তব্যে নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
এ সমাবেশের অল্প একটু দূরে গিয়ে কয়েকশ ট্রাম্প সমর্থক ক্যাপিটল হিলে নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। একপর্যায়ে কংগ্রেসের অধিবেশন চলার মধ্যেই পুলিশের বাধা ভেঙে ক্যাপিটল হিলে ঢুকে পড়েন তারা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও পেপার স্প্রে ব্যবহার করে পুলিশ।
সংঘর্ষের মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) সদস্যদের পাহারা দিয়ে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে পুলিশ। ট্রাম্প সমর্থক কয়েকজন আইনপ্রণেতার নির্বাচনের ফল বাতিলের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলার মধ্যেই সেখানে এ গোলযোগের সৃষ্টি হয়।
এ পরিস্থিতিতে সিনেট অধিবেশনও মুলতবি করা হয়। যৌথ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করা ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকেও পাহারা দিয়ে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে পুলিশ। এ সময় পুলিশ অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত আইন প্রণেতাদের তাদের আসনের নিচ থেকে গ্যাস মাস্ক বের করে পরার পরামর্শ দেয়।
হোয়াইট হাউজের কাছে সমবেত কয়েক হাজার সমর্থকের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বক্তব্য দেয়ার পর এ গোলযোগ দেখা দেয়। বক্তব্যে পুরনো অভিযোগ ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে তার কাছ থেকে নির্বাচন চুরি করে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলের নির্বাচন কর্মকর্তা ও নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা সবাই ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে তেমন কোনো জালিয়াতি না হওয়ার কথা বলেছেন। ওই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে ৭০ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের নির্ধারক ইলেকটোরাল ভোটের হিসাবে ট্রাম্পের ২৩২টির বিপরীতে বাইডেনের পক্ষে আসে ৩০৬টি। এরপর দেশের বিভিন্ন স্টেটে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আদালতে গিয়ে বিফল হন ট্রাম্প।