ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানি তেলের বাজার, বাড়ছে স্বর্ণ-রূপার দাম

প্রকাশিত: ৩:২৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০
ফাইল ছবি

ধলাই ডেস্ক: বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েই চলেছে। গত এক সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। প্রায় একমাস ধরে তেলের এই দাম বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ফলে মাসের ব্যবধানে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে সাড়ে ১৭ শতাংশের উপরে। ফলে ৯ মাসের মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দাম এখন সর্বোচ্চ।

তেলের দামের বড় উত্থানের মধ্যে বিশ্ববাজারে স্বর্ণ ও রূপার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। গেল এক সপ্তাহে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় আড়াই শতাংশ। এতে একমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে দামি এই ধাতুটি। স্বর্ণের পাশাপাশি রূপার দামেও বড় উত্থান হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রূপার দাম বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। একমাসের মধ্যে রূপার দামও এখন সর্বোচ্চ।

তবে এই পতনের ধকল কাটিয়ে আবার তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ডিসেম্বর মাসজুড়েই বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। এরমধ্যে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ১ দশমিক ৪৭ ডলার বেড়ে ৪৯ দশমিক শূন্য ৭ ডলারে উঠে এসেছে। এর ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এতে ৯ মাসের মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে এসেছে।

অপরিশোধিত তেলের পাশাপাশি বড় অঙ্কে দাম বেড়েছে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের। গত এক সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ১ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল ৫২ দশমিক ২৮ ডলারে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং মাসের ব্যবধানে ১৮ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এতে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারির পর ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে এসেছে।

অপরদিকে হান্টিং অয়েলের দাম গত এক সপ্তাহে দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়ে প্রতি গ্যালনের দাম ১ দশমিক ৫০ ডলারে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে মাসের ব্যবধানে হান্টিং অয়েলের দাম ১৮ দশমকি ৭৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে বছরের ব্যবধানে ২৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ কম রয়েছে। তবে প্রায় ৯ মাস বা গত ৫ মার্চের পর হান্টিং অয়েলে দাম সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে।

এদিকে মহামারি করোনাভইরাসের প্রকোপের মধ্যে চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। দফায় দফায় দাম বেড়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৪ ডলারে উঠে যায়। তবে ৭ আগস্ট থেকে পতনের কবলে পড়ে উড়তে থাকা স্বর্ণের দাম। ১১ আগস্ট এসে বড় পতন হয় স্বর্ণের দামে। একদিনে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১১২ ডলার পর্যন্ত কমে যায়। এরপর চলতে থাকে স্বর্ণের দরপতনের ধারা। এতে সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম সাড়ে ১ হাজার ৮০০ ডলারের কাছাকাছি নেমে যায়।

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার মধ্যেই ইউরোপজুড়ে শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ধাপ। এতে বিশ্ববাজারে আবার স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা দেয়। ১ হাজার ৯০০ ডলারের নিচে নেমে যাওয়া স্বর্ণের দাম আবার বাড়তে থাকে। বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৫ অক্টোবর থেকে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়।

তবে নভেম্বরে শেষদিকে এসে আবার পতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণের দাম। এতে এক সপ্তাহের মধ্যে ২৫ নভেম্বর এবং ২ ডিসেম্বর দু’দফায় দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বর্তমানে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭২ হাজার ৬৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৯ হাজার ৫১৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬০ হাজার ৭৬৯ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণ ৫০ হাজার ৪৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অবশ্য দেশের বাজারে স্বর্ণার দাম কমানোর ঘোষণা দেয়ার দিনেই (১ ডিসেম্বর) বিশ্ববাজারে আবার বড় উত্থানের আভাস পাওয়া যায়। দাম বাড়ার প্রবণতা গত সপ্তাহেও দেখা গেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ২ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৮৮১ দশমিক শূন্য ৪ ডলারে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে মাসের ব্যবধানে দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং বছরের ব্যবধানে ২৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেড়েছে স্বর্ণের দাম।

স্বর্ণের পাশাপাশি রূপার দামেও বড় উত্থান হয়েছে। গত এক সপ্তাহে রূপার দাম ৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স রূপার দাম ২৫ দশমিক ৭৭ ডলারে উঠে এসেছে। এতে মাসের ব্যবধানে রূপার দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর বছরের ব্যবধানে রূপার দাম বেড়েছে ৪৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।

সূত্র: জাগো নিউজ…