ধলাই ডেস্ক: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত এলে সাধারণত আপ্যায়নের একটি রেওয়াজ রয়েছে। তবে আজ মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এলে তাকে এককাপ চা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এর মাধ্যমে সীমান্তে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ যে কতটা ক্ষুব্ধ তা প্রকাশ পেল।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে হতাহতের ঘটনায় রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই কূটনীতিককে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়।
এদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অণু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক নাজমুল হুদার দপ্তরে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে প্রায় আধঘণ্টা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাকে এককাপ চা-ও দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আপ্যায়ন না করার মানে হচ্ছে—বাংলাদেশ এ বিষয়ে চরম অখুশি।
এদিকে বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেছেন, আজ সবাইকে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের মিটিং হয়েছে। বাংলাদেশের যত এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে বর্ডারে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের বাড়তি সদস্য মোতায়েন করা হবে।
রোহিঙ্গারা যাতে সাগর বা অন্য কোনো জায়গা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কথা সরকার এ মুহূর্তে ভাবছে না।
এর আগে গত ২০, ২৮ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশে এসে পড়ে। সে কারণে গত ২১, ২৯ আগস্ট ও ৪ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। এ ঘটনায় প্রায় এক মাসের ব্যবধানে এ নিয়ে চারবার সীমান্তের ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হলো।
গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে এক রোহিঙ্গা কিশোর আহত হয়। পরে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে, মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আরাকান বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোলাগুলি চলছে। এ ঘটনায় ব্যবহৃত মর্টার শেল বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়ছে।
সূত্র: আরটিভি..