কমলগঞ্জে বিধবার বাড়ির রাস্তা কেটে অবরুদ্ধ ঃ রাতে গাছ কর্তন, মহিলার উপর হামলা

প্রকাশিত: ৭:২২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২১
ছবি ধলাইর ডাক

স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আদমপুর ইউনিয়নের কাটাবিল গ্রামের বিধবার বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা কেটে জোরপূর্বক দখল করে অবরুদ্ধ করেছে প্রতিবেশী সন্ত্রাসীরা। বিষয়টি প্রশাসন ও সাংবাদিকদের অবগত করার কারনে রাতে বিধবা নারীর বাড়ি থেকে ১০টি গাছ কর্তন করে মহিলাকে নির্যাতন করেছে ওই সন্ত্রাসীরা। আহত বিধবাকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে (২৪ আগষ্ট) সুবেদা বেগমেরর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

জানা যায়, ২৩ আগষ্ট দিবাগত রাতে কাটাবিল গ্রামের বিধবা সুবেদা বেগমের বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তাটি কেটে জমির সাথে মিশিয়ে দেয় প্রতিবেশী মদরিছ মিয়ার ছেলে ইদ্রিছ মিয়া (৪০) সহ কতিপয় সন্ত্রাসীরা। তারা বিধবার বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা কেটে কলাগাছ লাগিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ফলে সুবেদা বেগম বাড়ির ভিতর অবরুদ্ধ জীবন যাপন করছিলেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে স্থাণীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে বিধবা মহিলা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করায় রাতেই বিধবার বাড়িতে লাগানো কাঁঠাল, পেয়ারা ও আমের ১০টি গাছ কেটে ফেলে। গাছ কাটতে বাঁধা দিলে সুবেদা বেগমের উপর হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়। স্থানীয়রা বিধবা মহিলাকে উদ্ধার করে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয়রা আরো জানান, প্রতিবেশি ইদ্রিস আলী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মিলে বিধবা সুবেদা বেগমের বাড়ির রাস্তা কেটে কলাগাছ লাগিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। ঘটনায় বাড়ির মালিক সুবেদা বেগম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা পুলিশের সহযোগীতা কামনা করেন।

সুবেদা বেগম বলেন, প্রায় ৬ মাস থেকে প্রতিবেশি ইদ্রিছ আলী তার সহযোগীরা আমাকে বাড়িছাড়া করার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। সরকারি ১নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত কিছু জমি ইদ্রিছ আলী ভোগদখল করে আসছেন। ইতিপূর্বে বাড়ির প্রবেশ পথের রাস্তাটি কেটে পার্শ্ববর্তী খাস জমিতে মিশিয়ে দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে রাস্তা বন্ধের ব্যাপারে আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও কমলগঞ্জ থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ এসে রাস্তা খুলে দেন। তার পরিবার চলাচলের সুযোগ পান। কয়েকদিন চলাচল করার পর আবারো গত সোমবার রাতের আঁধারে চলাচলের রাস্তায় কলাগাছ লাগিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। সাংবাদিকরা আসায় মঙ্গলবার রাতে দ্বিতীয় দফা বাড়ির ১০টি গাছ কেটে ফেলে। এতে বাঁধা দিলে আমাকে মারধোর ও নির্যাতন করে। বর্তমানে বিধবা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন এবং ঘটনায় থানায় মামলা দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

বিধবা মহিলার রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে অভিযুক্ত ইদ্রিছ আলীকে পাওয়া না গেলেও তার স্ত্রী আখারুন বেগম বলেন, এটি রাস্তা নয়, আমরার জমিতে কলাগাছ রোপন করেছি।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, শীঘ্রই বিধবার রাস্তা উদ্ধার করে দেওয়া হবে। নির্যাতনের বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে এবং আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।