কমলগঞ্জে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন

প্রকাশিত: ৭:৫৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
ছবি ধলাইর ডাক

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই রণাঙ্গনে সম্মুখযুদ্ধে দেশের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামের সন্তান সিপাহী হামিদুর রহমান।

যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। মাত্র ১৮ বছর বয়সে শহীদ হওয়া সিপাহী হামিদুর রহমান সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ পদকপ্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলাই সীমান্ত এলাকায় প্রচন্ড যুদ্ধ চলছিল। ২৮ অক্টোবর ভোর রাতে লেফটেন্যান্ট কাইয়ুমের নেতৃত্বে একটি দল পাক সেনাদের উপর চতুর্দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমন চালায়। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নেয়। দুটি গ্রেনেড সফলভাবে মেশিনগান পোস্টে আঘাত হানে, কিন্তু তার পরপরই হামিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। হামিদুর রহমানের মৃতদেহ সীমান্তের অল্প দূরে ভারতীয় ভূখন্ডে ত্রিপুরা রাজ্যের হাতিমের ছড়া গ্রামের স্থানীয় এক পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন উপলক্ষে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন,স্থানীয় প্রশাসন ও ধলাই সীমান্ত বর্ডারগার্ড এর যৌথ উদ্দ্যোগে দুপুরে বীরশ্রেষ্ট্র শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ্যে পুষ্পাঞ্জালী অর্পন করা হয়। পরে মিলাদ মাহফিল অনুষ্টিত হয়।এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশেকুল হক, ইউপি চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু, সমাজ সেবক মোস্তফা কামাল, বর্ডারগার্ড সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ।

উল্লেখ্য ২০০৭ সালের ২৭শে অক্টোবর বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই অনুযায়ী ২০০৭ সালের ১০ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি দল ত্রিপুরা সীমান্তের আমপাশা এলাকা থেকে হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ গ্রহন করে, এবং যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে কুমিল্লার বিবিরহাট সীমান্ত দিয়ে শহীদের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। ১১ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানকে ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।