বিনোদন ডেস্ক: করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। করোনা থেকে মুক্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি ঠিকই। কিন্তু ততদিনে তার ফুসফুসের নব্বই শতাংশে করোনাভাইরাসের আক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিলো। শ্বাস নিতে পারছিলেন না। অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিলো লাইফ সাপোর্টে। অবশেষে সব চেষ্টা থামিয়ে গতকাল ১৮ ডিসেম্বর রাত ৭টা ৩১ মিনিটে রাজধানীর স্পেশালাইজড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন খ্যাতিমান চিত্রসম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিন্টু। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মৃত্যুকালে এই গুণী চিত্রসম্পাদকের বয়স হয়েছিলো ৮১ বছর।
দেবাশীষ বলেন, ‘মিন্টু আংকেল ছিলেন আমার অভিভাবক। বাবার সঙ্গে তার সখ্যতা ছিলো দারুণ। দুজন দুজনকে নাম ধরে ডাকতেন। আমিনুল ইসলাম মিন্টু আংকেল তার দীর্ঘ কর্মজীবনে ৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেছেন। তারমধ্যে দুটি সিনেমাই ছিলো বাবার সঙ্গে। আমারও পরম সৌভাগ্য যে আংকেল আমার প্রথম সিনেমার চিত্র সম্পাদনা করেছেন। উনার মতো গুণী মানুষের চলে যাওয়া মানে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবক শূন্য হয়ে যাওয়া। মিন্টু আংকেলের বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
এদিকে আমিনুল ইসলাম মিন্টুর ছেলে ফারহান জানান, আজ ১৯ ডিসেম্বর বাদ জোহর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে তার বাবাকে। তিনি বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
আমিনুল ইসলাম মিন্টু প্রথম ১৯৮৬ সালে শ্রেষ্ঠ চিত্রসম্পাদক হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন ‘আঘাত’ সিনেমার জন্য। এরপর ১৯৮৭ সালে দিলীপ বিশ্বাসের ‘অপেক্ষা’, ১৯৯০ সালে ‘গরীবের বউ’ এবং সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে দিলীপ বিশ্বাসের ‘অজান্তে’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, আমিনুল ইসলাম মিন্টু ১৯৩৯ সালের ৫ আগস্ট সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে প্রখ্যাত চিত্রসম্পাদক বশীর হোসেনের সহকারী হিসেবে ‘চান্দা’ সিনেমা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। একক চিত্রসম্পাদক হিসেবে তার প্রথম কাজ করা মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘পয়সে’ সিনেমার মাধ্যমে। এটি মুক্তি পায় ১৯৬৩ সালে।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি চিত্রসম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন মালা, আখেরি স্টেশন, তালাশ, পায়েল, আনাড়ি, চকোরী, চান্দ অর চাঁদনী, পীচঢালা পথ, দাগ, বিজলী, দি রেইন, কি যে করি, জাদুর বাঁশী, আসামী হাজির, সারেং বউ, অঙ্গার, দাবী, আসামী, ফকির মজনু শাহ, অনুরাগ, সোহাগ, জিঞ্জির, আরাধনা, ভাঙ্গা গড়া, আঘাত, অপেক্ষা, গরীবের বউ, অজান্তে প্রভৃতি সিনেমায়।
ব্যক্তি জীবনে আমিনুল ইসলাম মিন্টু ছিলেন দুই সন্তানের জনক। তার বড় পুত্র ফারহান ইসলাম ও ছোট মেয়ের নাম মনা ইসলাম।
সূত্র: জাগো নিউজ…