আন্তর্জাতি ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার একটি হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি এক কনস্টেবলের মৃতুর পর বিক্ষোভ করেছেন রাজ্যের কয়েকশ পুলিশ সদস্য। সোমবার সকালের দি;কে ওই কনস্টেবলের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ করেন তারা।
স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, কলকাতার গরফা থানায় কনস্টেবল হিসাবে কর্মরত ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী পরিমল পাল। গত কয়েকদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়তে থাকায় রোববার তাকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সোমবার সকালের দিকে মারা যান তিনি। পুলিশের এই সদস্য এমআর বাঙুরের সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস (সারি) ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন।
তাদের অভিযোগ, আরও আগে পরিমলকে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন ছিল। বিক্ষোভকারী এক পুলিশ সদস্যের দাবি, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অসুস্থ ছিলেন ওই কনস্টেবল। তার গ্রামের বাড়ি কোচবিহারে। থানা ব্যারাকে দায়িত্ব পালন করতেন তিনি।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, পুলিশের ওই সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়ার পরও তাকে ডিউটি করতে হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। সেখানে রোববার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে তাকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হলেও পুলিশ কর্মীদের চিকিৎসার ব্যপারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন।
গরফা থানা এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ওই পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর সোমবার সকালের দিকে থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সকাল সাড়ে ১১টা থেকেই কনস্টেবল, অ্যাসিস্টান্ট সাব ইনস্পেক্টর এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন থানার ওসি সত্যপ্রকাশ উপাধ্যায় এবং তপন নাথ।
এসময় থানার ওসি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা না করে কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেন। এমন নির্দেশ পাওয়ার পর বিক্ষোভকারী পুলিশ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। থানার যানবাহন ও অন্যান্য সরঞ্জাম ভাঙচুর করেন তারা।
এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে কোভিড-১৯ এর প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জামের ঘাটতির অভিযোগ তুলে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে (পিটিএস) নজিরবিহীন বিক্ষোভ করেন কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার শুভঙ্কর সিনহা বলেন, ‘গরফা থানার এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।’
অন্য এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিক্ষোভের ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কর্মকর্তারা পুলিশকর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন। আমরা ওই পুলিশ কর্মীর ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য অপেক্ষা করছি। ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।