কলকাতায় চাহিদা বাড়ছে বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের

প্রকাশিত: ৩:১২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশি শিল্পীদের চাহিদা এখন দেশের মাটি ছাড়িয়ে বেড়ে গিয়েছে কলকাতাতেও। কলকাতায় যেসব তারকাদের হরহামেশাই দেখা যায় তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন জয়া আহসান এবং মিথিলা। অভিনেত্রী আজমেরী হক বাধনও কম যান না। কয়েকদিন আগেই পরিচালক সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত একটি ওয়েব ফিল্মে কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী।

অভিনয় না করলেও বাংলাদেশি শিল্পীদের কাছে পাশের দেশ ভারত থেকে বিভিন্ন সময় অফার আসতেই থাকে। কয়েকদিন আগেই বলিউডের কাজ করার অফার আসে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমের কাছে।

সময়টা ২০১৩ সাল। কলকাতার গুণী পরিচালক অরিন্দম শীলের হাত ধরে কলকাতার সিনেমা ‘আবর্ত’ এ অভিনয় করেন জয়া আহসান। প্রথম ছবিদের বাজিমাত করেন বাংলাদেশের এই অভিনেত্রী। এরপর একে একে জয়া ওপার বাংলার দর্শক মুগ্ধ করেছেন ‘বিজয়া’, ‘বিসর্জন’, ‘একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো’, ‘রাজকাহিনি’, ‘ভালোবাসার শহর’, ‘ঈগলের চোখ’, ‘কণ্ঠ’, ‘‘বিনিসুতোয়’ ইত্যাদি সিনেমা দিয়ে।

এখনো তিনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন টালিগঞ্জে। তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা সেখানে আকাশ ছোঁয়া। বলা চলে কলকাতার উল্লেখযোগ্য প্রায় সব পরিচালক ও প্রযোজকদের প্রথম পছন্দ জয়া। তার চাহিদার প্রভাবে ম্লান খোদ কলকাতারই অনেক অভিনেত্রী। যে তালিকায় আছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, স্বস্তিকা মুখার্জি, পাওলি দাম, রাইমা সেনের মতো গুণী অভিনেত্রীরা।

এদিকে রাজর্ষি দে পরিচালিত ‘মায়া’, রিঙ্গোর ছবি ‘আ রিভার ইন হেভন’ এ রয়েছেন এপার বাংলার আরেক অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। সৃজিত মুখার্জির স্ত্রী হিসেবে তো একটা প্রভাব রয়েছেই, বাংলাদেশের একজন চাহিদাসম্পন্ন অভিনেত্রী হিসেবেও মিথিলার গুরুত্ব বাড়ছে ওপারে।

এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের প্রতি কলকাতার এই আগ্রহের মূলে কিন্তু দর্শক। মূলত কলকাতার পরিচালকদের কাজগুলোর প্রতি খুবই আগ্রহী ঢাকার দর্শকেরা। তা সে সিনেমা হলের জন্যই হোক বা হইচই, জি ফাইভ হোক। এসব দর্শক ধরতেই সেখানকার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও নির্মাতারা বাংলাদেশের অভিনেত্রীদের প্রাধান্য দিচ্ছেন।

জয়া, মিথিলারা যে ঘরানার ছবিতে কাজ করেন, তাতে এর আগে সাধারণত পাওলি দাম, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, রাইমা সেনদের দেখা যেত। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির চাহিদা কমে যাওয়ায় শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহানেরাও অন্য ধারার ছবির দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে অল্প পরিসরে প্রতিযোগিতা বেশি চলছে কলকাতায়। সেখানে পছন্দের তালিকায় এগিয়ে থাকছেন বাঁধনেরা।

আনন্দবাজার বলছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নায়িকা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, এমন অনেক চরিত্রই বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের দেওয়া হয়, যেটা এখানকার যে কেউ করতে পারত।

অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তার মন্তব্যে বলেন, অনেকে বলছেন, বাংলাদেশ থেকে অভিনেত্রীরা এসে কাজ করায় টলিউডের কিছু অভিনেত্রীর মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আসলে আমাদের সমাজ এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে দেয়। বিশেষ করে মহিলাদের উপরেই বেশি চাপ তৈরি করা হয়। কেন এই চাপগুলো আমাদের নিতে হবে? এগুলো এড়িয়ে সদর্থক দিকগুলো ভাবলে, সকলেরই ভাল হবে। সকলে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাবেন। কথাটা কলকাতা-বাংলাদেশ সব ইন্ডাস্ট্রির নিরিখেই বলছি।

অভিনেত্রীরা দাবি করছেন, প্রতিযোগিতা ছিল, থাকবেও। তবে প্রতিভাই যে শেষ কথা বলবে, দ্বিমত নেই তা নিয়েও।