ধলাই ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ এর প্রভাবে ঝালকাঠির সুগন্ধা-বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঠালিয়ায় নদীর বেড়ি বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। জেলার নিম্নাঞ্চলে এরমধ্যে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে মাছের ঘের ও ফসলের ক্ষেত। ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন শতাধিক মাছ চাষি ও কয়েকশ’ কৃষক।
মঙ্গলবার দুপুর থেকেই পানি বাড়তে শুরু করে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ ফুট বাড়তি ছিলো। জেলার কাঠালিয়া উপজলা পরিষদ ও কাঠালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার বিষখালী তীরের বাঁধের একটা অংশ ভেঙে পানি ঢুকে বাড়ির আঙিনাসহ তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। এতে আতঙ্কে রয়েছেন বাঁধ ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা।
বিশেষ করে কাঠালিয়া সদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বড় কাঠালিয়া, পূর্ব কচুয়া, লতাবুনিয়া, রঘুয়ার দড়ির চর, সোনার বাংলা, আওরাবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া, ছিটকী ও আমুয়া, ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি, নতুন কলাবাগান, পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকা, রাজাপুরের বাদুরতলা ল ঘাট, নাপিতের হাট, চল্লিশ কাহনিয়া এলাকাসহ সুগন্ধা-বিষখালী নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৪৫টির অধিক গ্রামে পানি ঢুকেছে। এরমধ্যে অধিক নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সকাল থেকেই থেমে থেমে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাস বাড়ার সঙ্গে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিষখালী নদী পাড়ের (বাঁধ ভাঙন) বাসিন্দা আ. রব খান জানান, ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে আমারা খুবই আতঙ্কে থাকি। বিশেষ করে মঙ্গলবার রাতে আতঙ্কিত হয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে ছিলাম। কখন বাড়ি-ঘর ভেঙে নদীতে চলে যায়। হঠাৎ করে নদীর বাঁধ ভেঙে যেভাবে পানি উঠছে এতে খুবই বিপদে আছি।
কলেজ শিক্ষার্থী মো. জহিরুল লিমন জানান, বহু বছর ধরে লঞ্চঘাট এলাকা ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর লঞ্চঘাটের ৩শ’ মিটার এলাকায় বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের উত্তর সাইডে কিছুই ফেলানো হয়নি। পানির স্রোতের চাপে প্রতিদিন নদী ভাঙছে। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে আমাদের এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। রাতে পানি আরো বাড়বে। আমারা সবাই আতঙ্কে আছি। তাই দ্রুত এ বাঁধটি মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাই।
ঝালকাঠি জেলায় ঘূর্ণিঝড় যশ মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৪টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৫৯টি সাইক্লোন শেল্টার খুলে দেয়া ও ৪৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্রে রূপ দেয়া হয়েছে। ৩৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা, তৃণমূল পর্যায়ে মাইকিং করা, স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জোহর আলী জানান, ঝালকাঠিতে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে কন্ট্রোল রুম, ৪৯৯টি আশ্রয় কেন্দ্র, ৩৭টি মেডিকেল টিম, ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও ২শ টন চাল মজুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার মজুত আছে।
সূত্র|: ডেইলী বাংলাদেশ…