ডেস্ক রিপোর্ট: সোমবার ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের প্রস্তাব পাস হওয়ার পর থেকে দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা শুরু হয়।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের দুদিন পর পাকিস্তানে জাতীয় সুরক্ষা কমিটির (এনএসসি) এক বৈঠকে বুধবার ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে ইসলামাবাদে ফেরত নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই বৈঠকে।
ইসলামাবাদে বুধবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে জাতীয় সুরক্ষা কমিটির (এনএসসি) ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাতিল ও কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাসের সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকের পর পাক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সুরক্ষা কমিটির বৈঠকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া কূটনৈতিক সম্পর্কও কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ভারত থেকে ইসলামাবাদের রাষ্ট্রদূত ফেরত এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশটির সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে ও কাশ্মীর ইস্যুতে নজরদারি অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেন, আমাদের রাষ্ট্রদূত আর নয়াদিল্লিতে অবস্থান করবেন না এবং তাদের রাষ্ট্রদূতকে ইসলামাবাদ থেকে ফেরত পাঠানো হবে। বৈঠকে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের মর্যাদা বাতিল ও ভারতের একতরফা এবং বেআইনি পদক্ষেপ ও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান-ভারত দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ের পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনএসসি। একই সঙ্গে ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস জম্মু-কাশ্মীরিদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে পালন করা হবে।
বৈঠকে ভারতীয় নির্মম বর্ণবাদী শাসন, নীলনকশা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রকাশ করতে সম্ভাব্য সব ধরনের কূটনৈতিক চ্যানেলকে সক্রিয় করার নির্দেশ দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ও বেসামরিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের একটি প্রস্তাব রাজ্যসভায় উপস্থাপন করেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে আনা এই প্রস্তাবে পার্লামেন্টের ২৩৯ সদস্যের মধ্যে ১২৫ জন পক্ষে ভোট দেন; বিরোধিতা করে ভোট দেন ৬১ জন।
পার্লামেন্টে ওই প্রস্তাব পাস হয়ে যাওয়ার পর থেকে কাশ্মীরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ভারতের রাজ্যসভায় বাতিল হয়ে যাওয়ার পরপরই এটাকে বেআইনি বলে নিন্দা জানান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একই সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুই দেশের মাঝে সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।