কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে রক্তাক্ত করলেন ইউপি মেম্বার

প্রকাশিত: ১:০৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২১
সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননীকে (৩৪) দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছেন ইউপি সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের চৌগাছায়। এ অভিযোগে আলী আহমেদ নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নারী।

আলী আহাম্মেদ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের হোগলডাঙ্গা গ্রামের ইউপি সদস্য এবং গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। মোবাইল ফোনে ইউপি সদস্য আলী আহমেদ ওই নারীকে মেরে রক্তাক্ত করার কথা স্বীকার করে বলেছেন, তার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক। সেখানে গিয়ে তার অনৈতিক কাজে রেগে গিয়ে ঘুষি মারলে হাতের আংটিতে কেটে গেছে।

সোমবার রাত ৯টায় মারধরের পর গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে মঙ্গলবার চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা নিয়ে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই নারী।

লিখিত অভিযোগে ওই নারী বলেছেন, আলী আহমেদ তার প্রতিবেশী। আনুমানিক ৩ বছর আগে তার স্বামী মালেশিয়া যায়। তারপর থেকে আলী আহমেদ বিভিন্নভাবে তাকে কু-প্রস্তাব দিতেন। তাতে রাজি না হওয়ায় মেম্বার তার (ওই নারী) উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে আসছিল। পরে তিনি (ওই নারী) স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করলে তারা স্থানীয়ভাবে মিমাংশা করে দেন। এরপরও আলী আহমেদ সংশোধন না হয়ে ওই নারীর সংসার ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। এর জের ধরে গত সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে আলী আহমেদ তার আরো ২/৩ জন সঙ্গীসহ আমার বাড়িতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে আমাকে ধারালো দা দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করতে গেলে সে কোপ আমার বাম চোয়ালে লেগে কেটে যায়। এসময় তার সাথে থাকা ব্যক্তিরা আমাকে এলোপাথাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এসম ওই নারীর ঘরের শোকেচের ড্রয়ারে থাকা নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, ৮ আনা ওজনের একজোড়া কানের দুল, ৪ আনা ওজনের স্বর্ণের আংটি নিয়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।

ওই নারী বলেন তারা বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পরে তিনি গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টায় চৌগাছা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।

ওই নারী বলেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তার বড় মেয়ে প্রতিবন্ধী। স্বামীর অনুপস্থিতিতে মেম্বার তাকে প্রায় সময়ই উত্যক্ত করে। এ নিয়ে গ্রাম্য বিচারে সে ভবিষ্যতে আর এমন করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।

এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের হোগলডাঙ্গা গ্রামের ইউপি মেম্বার আলী আহমেদ বলেন, কেউ কি এমনি এমনি কাউকে মারে? ওই নারীর সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক। তার বাড়িতে গিয়ে তাকে একটি অনৈতিক কাজ করতে দেখতে পেয়ে আমি রেগে গিয়ে তাকে একটি ঘুষি মারি। এতে আমার হাতে থাকা আংটিতে তার মুখ কেটে যায়। তিনি (ওই নারী) বলছেন আপনি কু-প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তাকে রক্তাক্ত করেছেন, আপনার বউ-বাচ্চা আছে তারপরও প্রেমের সম্পর্ক বলছেন, এটি কি অন্যায় নয় প্রশ্নে তিনি বলেন আমারও বউ-বাচ্চা আছে, তারও স্বামী সন্তান আছে। অন্যায় হলেও যেটা সত্য আমি সেটাই বলছি।

তিনি অভিযোগ করেছেন আপনি তার বাড়ি থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছেন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক, আমি তো চুরি করতে যাই নি যে টাকা স্বর্ণালঙ্কার নেব।’

অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ…