ধলাই ডেস্ক: সাতক্ষীরার তালায় পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে পুকুরে চুবিয়ে হত্যা করেন সৎ মা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রোকেয়া খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর বুধবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক রাকিবুল ইসলামের কাছে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রোকেয়া। এর আগে, মঙ্গলবার গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার রোকেয়া উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নের লাউতারা গ্রামের আব্দুল কাদিরের দ্বিতীয় স্ত্রী। নিহত আফসানা খাতুন তার সৎ মেয়ে ছিল।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে আফসানার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে সময় আফসানার মরদেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এছাড়া এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।
পরে দীর্ঘ অনুসন্ধানে পুলিশ জানতে পারে আব্দুল কাদিরের প্রথম স্ত্রী নার্গিস খাতুনের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ ও বনিবনা না হওয়ায় ২০২০ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে একই বছরের ২৬ অক্টোবর একই উপজেলার জেয়ালা গ্রামের রোকেয়া খাতুনকে বিয়ে করেন কাদির। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া প্রথমপক্ষের মেয়ে আফসানাকে সহ্য করতে পারতেন না। প্রায়ই মারধর করতেন।
এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী ও শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হতেন রোকেয়া। একপর্যায়ে রোকেয়া প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠেন এবং আফসানাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আফসানাকে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল বাড়ির পাশের পুকুরে গোসলের নাম করে নিয়ে যান এবং পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে পুকুরে ডুবে শিশু আফসানা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করা হয়।
এ ঘটনার কিছুদিন পর রোকেয়া নিজেই স্বামীর কাছে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। ঘটনাটি জানতে পেরে প্রথমে আদালতে একটি সিআর মামলা করেন কাদির। তদন্তকারী কর্মকর্তা ভুক্তভোগীর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা এবং রাবেয়ার স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য শোনেন এবং নিশ্চিত হন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি তালা থানায় দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন কাদির।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তালা থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) প্রীতিশ রায় জানান, বুধবার রোকেয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।