ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পর্দা দিয়ে ক্লাস চলছে আফগানিস্তানে

প্রকাশিত: ৫:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১
সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই মানুষের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছিল যে, ভবিষ্যতের দিনগুলো না জানি কেমন হতে চলেছে। বিশেষ করে নারীদের বাইরে বের হওয়া, চাকরি এবং পড়ালেখা নিয়ে বেশ শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পরই তালেবান লোকজনকে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে যে, নারীরা কর্মক্ষেত্রসহ সব ক্ষেত্রেই আগের মতো ফিরতে পারবেন। তবে তাদের অবশ্যই হিজাব পরতে হবে।

তালেবান সরকারেও নারীদের অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এদিকে, তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর দেখা গেল অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই নারীরা ক্লাস শুরু করেছেন। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী এবং পুরুষ শিক্ষার্থীদের মাঝে পর্দা টেনে বা বোর্ড বসিয়ে ক্লাস নিতে দেখা গেছে।

আফগানিস্তানের ওপর ভালোভাবেই নজর দিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব। তালেবান ক্ষমতায় যাওয়ার পর নারীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হচ্ছে তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কিছু পশ্চিমা দেশ বলছে, তালেবান কিভাবে দেশ চালাচ্ছে বিশেষ করে নারী এবং কন্যা শিশুদের প্রতি তাদের আচরনের ওপর ভিত্তি করেই কারা মৌলিক সহায়তা এবং স্বীকৃতি অর্জন করতে পারবে।

এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের শাসনামলে নারী এবং কন্যা শিশুদের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো চাকরি করা নিষিদ্ধ করেছিল তালেবান। তবে এবার পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। বিশেষ করে তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী নারীদের অধিকারকে সম্মান করা হবে। তবে সেটা কেমন হবে তা এখনও পরিষ্কার নয়।

এর আগে তালেবানের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, নারীরা আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তালেবানের শাসনে নারীদের প্রতি কী ধরনের আচরণ করা হতে পারে সে বিষয়ে জবিউল্লাহ মুজাহিদকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি আগের বিবৃতিরই পুণরাবৃত্তি করেছেন। তিনি বলেছেন, শরীয়া শাসনের আওতায় নারীদের অধিকার সম্মানের সঙ্গে রক্ষা করা হবে। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। তার মতে, নারীরা হচ্ছে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সুতরাং তাদের সঙ্গে সেভাবেই ব্যবহার করা হবে।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল, কান্দাহার এবং হেরাতের মতো বড় শহরগুলোর শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নারী শিক্ষার্থীরা আবারও ক্লাসে ফিরে এসেছেন। তবে নারী এবং পুরুষদের পর্দা বা বোর্ড দিয়ে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। তবে অনেক শিক্ষার্থীই এতে খুশি নন।

আনজিলা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের আগেও তারা কখনও পুরুষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে ক্লাস করেননি। ছেলে এবং মেয়েদের বসার জন্য আলাদা ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এভাবে ক্লাসে মাঝখানে পর্দা বা বোর্ড দিয়ে আলাদা করা হয়নি।

গত সপ্তাহেই তালেবান এক ঘোষণায় জানিয়েছিল স্কুল, কলেজের ক্লাস আবারও শুরু হবে। তবে ছেলে এবং মেয়েদের অবশ্যই পৃথকভাবে ক্লাস নিতে হবে। তালেবানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, এখন যেভাবে ক্লাস চলছে সেটাই সম্পূর্ণভাবে গ্রহণযোগ্য। তাদের মতে, আফগানিস্তানে বর্তমানে সম্পদ এবং জনবলের সংকট রয়েছে। তাই এভাবে একই শিক্ষকের মাধ্যমে ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের একই সময়ে ক্লাস নেওয়াটাই সবচেয়ে উত্তম পন্থা।