জোয়ারে প্লাবিত বরিশাল নগরী

প্রকাশিত: ৬:২১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০২৩
সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: পূর্ণিমার জোয়ার ও উজানের ঢলে  বরিশাল নগরীর নদ-নদীর পানির প্রবাহ বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। নদীর তীরের জনপদ ও চরাঞ্চল দুই-তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জোয়ারের সময় পানিতে তলিয়ে গেলেও ভাটায় নেমে যাচ্ছে পানি। জোয়ারের ৩-৪ ঘণ্টা পর ভাটার সময় আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। খানিক সময়ের জন্য হলেও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নদীর তীরবর্তী ও নিচু এলাকায় বসবাস করা মানুষদের।

স্থানীয়রা জানান, জোয়ারের পানিতে তাদের ঘরে পানি ঢুকছে, রাস্তা ঘাট ডুবে যাচ্ছে। এতে চলাচলের যোগ্য সড়ক ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রোববার বিকেলের পর কীর্তনখোলার পানিতে বরিশাল নগরী ও নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে।

বিকেল থেকে বরিশাল নগরীর রসুলপুর, পলাশপুর ৩, ৭, ৮ নম্বর, ভাটিখানা, সাগরদী, ধান গবেষণা রোড, জিয়ানগর, ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড, স্টেডিয়াম কলোনি নগরীর সদর রোড, নগরীর মাইনুল হাসান সড়ক, বগুড়া রোডের একাংশ, বটতলার একাংশ, আমির কুটির জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হক বলেন, চারদিন ধরে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তিন ফুটের বেশি উচ্চতায় পানি থাকে। দুটি ওয়ার্ডের  তিন কিলোমিটারের এলাকাবাসী এ পানিতে জিম্মি। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধিকে দেখলাম না খবর নিতে।

এদিকে পানিতে প্লাবিত থাকে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খ্রিস্টান পাড়া ও ত্রিশ গোডাউন এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের  চরআইচা খেয়াঘাট, জিয়ানগর, পূর্ব রূপাতলী ও পাকার মাথা।

স্থানীয় বাসিন্দা তাপস বলেন, এ পানি প্রতি বছর উঠছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে বিভিন্ন প্রাকৃতিক সমস্যা সৃষ্টি হলে পানি বেড়ে যায়। এখন কীর্তনখোলা নদীর পানির বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার নিচু এলাকা প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ওই সময় ঘর থেকে বের হতে হলে তিন ফুট পানিতে পা চুবাতে হয়। এরপর গন্তব্যে গিয়ে আবার পানি পেরিয়ে বাসায় প্রবেশ করতে হয়।

নগরীর ধান গবেষণা এলাকার আফজাল বলেন, কীর্তনখোলার পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে এ সমস্যা বড় আকার ধারণ করে। তবে প্রতি বছর বর্ষাকালের স্বাভাবিক দিনগুলোতেও পানিতে প্লাবিত হয় ধান গবেষণা এলাকার সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি। পানি সরানোর জন্য ড্রেন নেই। ড্রেন থাকলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না।

ওই দুই ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রয়েল ও ফরিদ আহমেদ বলেন, কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে বাঁধ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে সড়ক উঁচু করে ড্রেন নির্মাণ করে সাগরদী খালের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

এতে করে কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে উঠলেও ওইসব এলাকায় পানি প্রবেশ করবে না। অক্টোবরে দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

নবনির্বাচিত মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, শপথ গ্রহণের পর বেশকিছু এলাকা পরিদর্শন করে সমস্যা তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের সমস্যা নগরীর বেশকিছু এলাকায় রয়েছে। স্থানীয় এমপিকে সঙ্গে নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা হবে। আমি শুধু আশ্বাস দেই না, দায়িত্ব নেয়ার পর নগরবাসী তা বুঝতে পারবে। যে ওয়াদা করেছি, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে নজির স্থাপন করব।

সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ…