ধলাই ডেস্ক: ভারতের মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের দিকে ধেঁয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘নিসর্গ’। প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে শক্তিশালী ঝড়ে পরিণত হচ্ছে এটি। ফলে উপকূলে আছড়ে পড়ার পর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বুধবার দুপুর ১টা থেকে ৩টার মধ্যে মুম্বাইয়ের ১শ কিলোমিটার দূরে আলিবাগের উপকূলে নিসর্গ আছড়ে পড়বে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর।
বুধবার আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে যে, মহারাষ্ট্রের আলিবাগ থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মুম্বাই থেকে ১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং গুজরাটের সুরাট থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে এই শক্তিশালী ঝড়।
সে কারণে ইতোমধ্যেই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট প্রশাসন। দুই রাজ্যের উপকূলীয় এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বহু মানুষকে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যেই কমপক্ষে এক লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু হাসপাতাল থেকে করোনা রোগীদেরও সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিকেলে ৪ মাত্রা পরিণত হয়ে এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে আলিবাগে ভূমিধসের ঘটনা ঘটতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এ ছাড়া সাড়ে ৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যেই মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়ায় জারি হয়েছে ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা।
মুম্বাই পুলিশ মঙ্গলবার রাতে নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, উপকূল বরাবর যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর মোট ৩০টি দল নামানো হয়েছে। এক একটি দলে রয়েছেন ৪৫ জন। উপকূল এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর কেউ যেন সমুদ্রের ধারে কাছে না আসতে পারে সেজন্য টহল দেওয়া হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বুধবার বেশিরভাগ ফ্লাইট বাতিল করেছে মুম্বাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে দিনে ২৫টি ফ্লাইট ওঠানামা করলেও বুধবার শুধুমাত্র ১২টি প্লেন অবতরণ করবে বিমানবন্দরটিতে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে এমনিতেই বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র। রাজ্যটিতে ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, প্রতিদিনই বাড়ছে এই সংখ্যা। তার ওপর নতুন বিপদ নিয়ে এসেছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ।