ধলাই ডেস্ক: নাটোরের সিংড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অসংখ্য বাড়িঘরে পানি ঢুকছে। বন্যার্ত সহস্রাধিক মানুষ ২০টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে দিনাতিপাত করছেন।
বন্যায় সিংড়া উপজেলা সদরের থানা মোড়, সাবরেজিস্ট্রার অফিস, কাঁচাবাজার ও গোডাউন পাড়ায় পানি ঢুকে পড়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জেলা জুড়ে নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সিংড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২০০ বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এলজিইডির ১২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যায় আশ্রয়হীন হয়েছেন ১৩ হাজার মানুষ। বন্যার্তদের জন্য সিংড়া উপজেরা সদরে সাতটি, শেরকোল ইউনিয়নে পাঁচটি , লালোর ইউনিয়নে তিনটি এবং ডাহিয়া, ইটালী, কলম, চামারী ও হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নে একটি করে মোট ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
সিংড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আল আমিন সরকার জানান, শুক্রবার বন্যার্ত এক হাজার পরিবারের মধ্যে চাল, ডাল আলু ও মাছ বিতরণ করা হয়েছে। এই ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
তিনি জানান, বন্যা দুর্গতদের সহায়তার জন্য ৫৬ মেট্রিক টন চাল, এক লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ঈদের বিশেষ ভিজিএফের ২০০ মেট্রিক টন চাল বন্যা দুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, বৃষ্টিপাত এবং উত্তরের ঢলের কারণে কমপক্ষে আরও এক সপ্তাহ চলনবিলে পানি বৃদ্ধি পাবে। নতুন করে বাড়িঘর প্লাবিত হবে।
এদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক শুক্রবার (২৪ জুলাই) সিংড়া উপজেলার লালোর ইউনিয়নের ত্রিমোহনীসহ বিভিন্ন এলাাকার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন এবং ত্রিমোহনীতে ২৫০টি বন্যা দুর্গত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়া তিনি বন্যার ভেতরে চলাচলের জন্য ১৩টি নৌকা বিতরণ করেন।
এ সময় জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আগেও আমরা বড় ধরনের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছি। কোনো লোককে না খেয়ে থাকতে হয়নি। যত বড় ধরনের দুর্যোগ আসুক না কেন ইনশাআল্লাহ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা তা শক্ত হাতে মোকাবেলা করব।
তিনি আরও বলেন, সিংড়াা উপজেলায় বন্যার্তদের আশ্রয়ের জন্য ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাদের জীবন ধারণের জন্য সব ধরণের সহায়তা প্রদান করা হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার তরফ থেকে আমরা চলনবিলবাসীকে উন্নত জীবন উপহার দেব। বন্যায় যতদিন প্রয়োজন হয় ততদিন দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ ও চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে। বন্যায় নষ্ট হওয়া বাড়িঘর, বাঁধ, রাস্তঘাট পুনরায় নির্মাণ করা হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হানসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।