নিহত দুই ক্রিকেটারের দেহ মর্গে ফেলে রাখায় হাসপাতাল ভাঙচুর

প্রকাশিত: ৬:৫৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০১৯
ছবি সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই ক্রিকেটারের মরদেহ ১০ ঘণ্টা মর্গে ফেলে রাখার অভিযোগে নিহতের বন্ধু ও স্বজনরা মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করেছেন।

এসময় বিক্ষুব্ধরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের অফিসের জানালার কাচ ও ফুলের টব ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। হামলার সময় তিন বহিরাগত হামলাকারীকে আটক করেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস জানান, সোমবার দুপুরে হাসপাতালের মর্গে দুটি মরদেহ আসে। বিষয়টি তিনি মঙ্গলবার সকালে জানতে পারেন। দুপুর ১২টার দিকে তিনি মরদেহ দুটির ময়নাতদন্তের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় ১৫-২০ যুবক একসঙ্গে তার অফিসে প্রবেশ করে ডাক্তার খুঁজতে থাকে। তিনি নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিলে ওই যুবকরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারধর শুরু করে। কেউ কেউ লাঠিসোটা খুঁজতে থাকে। হামলাকারীরা তার অফিসের টেবিল ভাঙচুর ও কাগজপত্র তছনছ করে। এসময় তার অফিসসহায়ক জাহিদ বাধা দিলে তাকেও মারধর করা হয়।

তিনি আরও জানান, উত্তেজিত যুবকদের হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি দৌড়ে অধ্যক্ষের অফিসে দোতলায় চলে যান। সেখানেও ওই যুবকরা গিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে এবং অধ্যক্ষের অফিসের জানালা, ফুলের টব ভাঙচুর করে। পরে তিনি একটি কক্ষে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে রক্ষা পান।

এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসককে বহিরাগতরা লাঞ্ছিত এবং কলেজের আসবাবপত্র ভাঙচুরের খবর পেয়ে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে তারা ধাওয়া দিয়ে তিন হামলাকারীকে আটক করেন। তারা হলেন- অন্তর (১৭), শান্ত (২০) ও বোরহান (১৮)। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আটকদের থানায় নিয়ে যায়।

সদর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে দেরি হওয়ার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় তিন হামলাকারীকে মেডিকেল কলেজের ছাত্র, দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও কর্মচারীরা আটক করেন। এ ব্যাপারে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোগড়া বাইপাস মোড়ে লড়ি চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। তারা হলেন- সজীব সরকার (১৭) ও অনূর্ধ্ব ১৮ ক্রিকেট দলের গাজীপুরের অধিনায়ক ক্রিকেটার জয়দেব নাথ (১৭)। ওই দিন দুপুরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। মর্গে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মরদেহ পড়ে থাকায় এবং দ্রুততম সময়ে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন না করার অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে নিহত দুই কিশোরের বিক্ষুব্ধ স্বজন ও বন্ধুরা এ হামলা চালায়।