ধলাই ডেস্ক: বরিশাল নগরীর একটি আবাসিক হোটেলে পরকীয়া প্রেমিকার (২৮) সঙ্গে রাত কাটাতে গিয়ে সোহরাব হোসেন সিকদার (৪৫) নামে বিএনপির সাবেক এক নেতার মৃত্যু হয়েছে।
এ সময় তার পকেট থেকে যৌন উত্তেজক ওষুধ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ ও চিকিৎসকদের ধারণা যৌন উত্তেজক বড়ি সেবন করায় অতিমাত্রায় রক্তচাপের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন।
সোহরাব হোসেন সিকদার বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়া গ্রামের মৃত রুস্তুম আলী সিকদারের ছেলে। তিনি টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
আবাসিক হোটেল গ্রান্ড প্লাজার একাধিক কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে সোহরাব হোসেন সিকদার হোটেলে ওঠেন। হোটেলের ম্যানেজারের কাছে কক্ষ নেয়ার সময় ওই নারীকে স্ত্রী বলে পরিচয় দেন। হোটেলের রেজিস্টারে তাই লেখা রয়েছে। ১০১ নম্বর কক্ষে তারা অবস্থান করছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোহরাব হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাতেই ওই নারী ও হোটেলের লোকজন তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহরাব হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত কোতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই নাজমুল হুদা জানান, জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহরাব হোসেনকে মৃত ঘোষণার পর পরই ওই নারী কিছু বুঝে ওঠতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এসময় ওই নারীকে ডেকে সোহরাব হোসেন তার কি হয়-জানতে চাওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী জানান, সোহরাব হোসেনের শালার স্ত্রীর বান্ধবী তিনি। প্রায় আড়াই বছর আগে মোবাইল ফোনে সোহরাবের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়। সোহরাব হোসেন বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক ছিলেন তিনি জানতেন। সবকিছু জেনেই তিনি সোহরাবের সঙ্গে সম্পর্ক করেছিলেন।
ওই নারী আরও জানান, সোহরাব তাকে বিয়ে করেছিলেন। একটি মসজিদে একজন হুজুর তাদের বিয়ে পড়িয়েছিলেন।
এসআই নাজমুল হুদা জানান, এরপর তাদের বিয়ের কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়। কিন্তু ওই নারী জানান, তাদের বিয়ে নোটারী বা রেজিস্ট্রি হয়নি। কোনো কাগজপত্র নেই।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদ জানান, মৃত্যুর পর সোহরাব হোসেনের পকেটে যৌন উত্তেজক ওষুধ পাওয়া গেছে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যৌন উত্তেজক বড়ি সেবন করায় অতিমাত্রায় উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সোহরাব হোসেনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।