আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে শেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার অমানবিকভাবে হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া সহিংস বিক্ষোভ পঞ্চম দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভ ক্রমশ ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় দেশটির ১৬টি অঙ্গরাজ্যের মোট ২৫টি শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, চলমান এই সহিংস বিক্ষোভ সামাল দিতে ৮টি অঙ্গরাজ্যে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এরপরও বিক্ষোভ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
দেশটির বেশকিছু স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটেছে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মত ঘটনাও।
এদিকে চলমান এই বিক্ষোভের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হিংস্র কুকুর ও ভয়ঙ্কর অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া হুমকি দিয়েছেন সেনা মোতায়েনেরও।
লস এ্যাঞ্জেলসের মেয়র এরিক গারচেট্টি পুরো শহরজুড়েই কারফিউয়ের মেয়াদ বৃদ্ধির পর সবাইকে ঘরে থাকার জন্যে অনুরোধ করে বলেছেন, ‘আমি সব সময় লস এ্যাঞ্জেলসের বাসিন্দাদের রক্ষা করব।’
মিনিয়াপলিসের ৮০ শতাংশ মানুষ এখন কারাগারে বন্দী। এদের গত দুইদিনে মিনেসোটা থেকে গ্রেফতার করার তথ্য মিলেছে হেনিপিন কাউন্টি শেরিফস অফিস থেকে।
মিনিয়াপোলিসের মেয়র জ্যাকব ফ্রে বলেন, গত কয়েক দশকে যা নির্মাণ হয়েছে তা শেষ হয়ে গেছে শহরের বাইরে থেকে আসা বিক্ষোভকারীদের ভাঙচুরের কারণে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ন্যাশনাল গার্ডের ১০ হাজার ৮০০ সদস্য পাঠানোর পর আরো ৪ হাজার ১০০ সিটিজেন সোলজার্স ও এয়ারম্যানকে মিনেসোটায় মোতায়েন করা হয়েছে।
গত সোমবার জালিয়াতির অভিযোগে জর্জ ফ্লয়েড নামে কৃষ্ণাঙ্গ এক যুবককে গ্রেফতারের পর হাঁটু চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার। এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন আরো তিন পুলিশ সদস্য।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে মিনেসোটাসহ গোটা যুক্তরাষ্ট্রে।
পরবর্তীতে সেই শেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিনের বিরুদ্ধে গুরুতর হত্যার ‘থার্ড-ডিগ্রি মার্ডার’ অভিযোগ এনে মামলা করা হয়। এছাড়া বাকি তিনজনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়। তবে এরপরও দেশ জুড়ে অব্যাহত রয়েছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ।