ভিডিও কলে কথা বলতে পারবেন কারাবন্দিরা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৩:৩৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
ছবি সংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, করোনার কারণে কারাগারে বন্দিদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ থাকায় তাদের পরিবারের সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন ১০ মিনিট মোবাইলে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। মোবাইলে কথা বলার পাশাপাশি ভিডিও কলের ব্যবস্থার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।

তিনি বলেন, কারাগারে দায়িত্ব পালন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ভিন্নতর ও চ্যালেঞ্জিং। কারাগারের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি বন্দিদের প্রতি মানবিক আচরণ প্রদর্শন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে অপরাধীদের চরিত্র সংশোধন করে সমাজে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

রোববার সকালে গাজীপুরে কাশিমপুর কমপ্লেক্সে ১২তম ব্যাচ ডেপুটি জেলার এবং ৫৯তম ব্যাচ কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তর করতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। কারাগারের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয়েছে বন্দিদের সুযোগ সুবিধা। বর্তমান সরকারের আমলেই ২০০ বছরের ইতিহাসের সকালের নাস্তায় রুটি ও গুড়ের পরিবর্তে সপ্তাহে চার দিন সবজি-রুটি, দুই দিন খিচুড়ি, একদিন হালুয়া-রুটি দেওয়া হচ্ছে, যা যুগান্তকারী পরিবর্তন। বাংলা নববর্ষসহ বিশেষ দিবসগুলোতে উন্নত মানের খাবারের জন্য বন্দিপ্রতি বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবং বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবন ও যৌবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটিয়েছেন কারাগারের চার দেয়ালের ভিতরে। তিনি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারাগারের ভিতরে বসেই। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ নামক গ্রন্থ দুইটিতে বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন এবং কারাগারের বিষয়াবলী সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই কারাগারেই নির্মমভাবে শহিদ হয়েছেন জাতীয় চার নেতা। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে একাধিকবার কারাবরণ করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা জানি- কারাগার ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জনজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সমাজ ও রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কারাগারে নিরাপদে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারীদের সাজা কার্যকর করা হয়েছে কারাগারে। এভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস এবং কারাগারের নাম একসঙ্গে মিশে আছে।

তিনি বলেন, কারাগার এখন কেবল শাস্তি কার্যকর করার জায়গা নয়, বরং কারাবন্দিদের বিভিন্ন প্রকার কর্মমুখী প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে দেওয়ার ন্যায় গুরুদায়িত্ব পালন করছে কারাগারগুলো। দেশের সকল কেন্দ্রীয় কারাগারসহ অধিকাংশ জেলা কারাগারে বন্দিদেরকে যুগোপযোগী বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। বন্দি শ্রমে উৎপাদিত পণ্যের আয়ের অর্ধেক বন্দিকে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, কারাগারের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি বন্দিদের প্রতি মানবিক আচরণ প্রদর্শন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে অপরাধীদের চরিত্র সংশোধন করে সমাজে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

পরে মন্ত্রী রিক্রুট ডেপুটি জেলাদের র‌্যাংক ম্যাচ প্রদান এবং রিক্রুট প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
প্রশিক্ষণার্থীদের অন-আর্মড কম্ব্যাট ও পিটি ডিসপ্লে উপভোগ করেন।

সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ…