মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ, দেশ ছাড়ছে হাজারো মানুষ

প্রকাশিত: ২:৪৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১
সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের সামরিক শাসন বিরোধী মিলিশিয়াদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াইয়ের কারণে সীমান্তবর্তী একটি শহরের অধিকাংশ বাসিন্দা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর ছোড়া গোলায় শহরটির অনেকগুলো ভবনে আগুন ধরে গেছে।

এমনিতে চীন রাজ্যের থান্টল্যাং শহরে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস করে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই আশ্রয়ের খোঁজে আশপাশের এলাকাগুলোতে ও কিছু লোক প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে স্থানীয় এক সমাজ প্রধান জানিয়েছেন।

চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে অশান্তি চলছে। সামরিক শাসন শুরু হওয়ার পর দেশজুড়ে ক্ষোভ, বিক্ষোভ, ধর্মঘট, প্রতিবাদ ও অবশেষে জান্তাবিরোধী মিলিশিয়ার আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।

গত রোববার থান্টল্যাংয়ে মিলিশিয়া বাহিনীগুলোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াই চলাকালে প্রায় ২০টি বাড়িতে আগুন লাগে, সামাজিক মাধ্যমে আসা ছবিতে ভবনগুলোতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

সৈন্যরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে যাওয়া এক খ্রিস্টান যাজককে গুলি করে হত্যা করে বলে মিয়ানমার নিউজ পোর্টালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই খবরের বিরোধিতা করা হয়েছে।

গ্লোবাল নিউ লাইট মিয়ানমার বলেছে, ওই যাজকের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে আর প্রায় ১০০ ‘সন্ত্রাসী’ সৈন্যদের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালানোর পর দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে।

স্থানীয় সমাজের নেতা সালাই থাং জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের প্রথমদিকে মিলিশিয়া যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি দখল করার পর সামরিক বাহিনী বিমান হামলা চালিয়ে জবাব দেয়। সম্প্রতি চার বেসামরিক নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সামরিক বাহিনী বিরোধী চিন ডিফেন্স ফোর্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৩০ সৈন্যকে হত্যা করেছে তারা।

এসব দাবীর কোনোটি রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি আর মন্তব্যের জন্য সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রকে ফোন করা হলেও তিনি জবাব দেননি।

মৃত ওই যাজকের একজন আত্মীয় রয়টার্সকে বলেছেন, অধিকাংশ লোকই শহর ছেড়ে পালিয়ে গেছে, শুধু ওই যাজকের চালানো একটি এতিমখানায় প্রায় ২০টি শিশুসহ হাতেগোনা কিছু বাড়িতে কয়েকজন লোক রয়েছেন।

সমাজ নেতা সালাই থাং জানান, বাস্তুচ্যুত লোকদের জন্য গভীর উদ্বেগ বোধ করছেন তিনি যারা নিকটবর্তী গ্রামগুলোতে ও কিছু ভারতের মিজোরাম রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে।

“ওই শরণার্থীরা এখন খাবার ও আশ্রয়ের জন্য কঠিন সংগ্রাম করছে,” টেলিফোনে বলেছেন তিনি।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বিরোধী দলগুলোর তৈরি করা গুপ্ত ছায়া সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ ৭ সেপ্টেম্বর বিদ্রোহ ঘোষণা করে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামে পরিচিত নতুন মিলিশিয়া বাহিনীকে জান্তা ও তাদের সম্পদের ওপর হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে চিন রাজ্যের মতো কয়েকটি এলাকায় লড়াইয়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।