ধলাই ডেস্ক: বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহের মেলাকে জামাই মেলাও বলা হয়। মেলা উপলক্ষে দুইদিন আগে থেকেই আসতে শুরু করেন মেয়ে জামাইসহ আত্মীয় স্বজন। আশপাশের গ্রামে চলে নানা আনন্দ উৎসব এবং অতিথি আপ্যায়নের আমেজ।
এ মেলার প্রধান আকর্ষণ নানা প্রজাতির বিশাল আকৃতির মাছ। বড় জাতের সব মাছই রয়েছে এ মেলায়। তবে শুধু মাছই নয়, কাঠের ফার্নিচার থেকে মিষ্টি মিঠাই সব কিছুই মিলবে মেলাতে। এ মেলার কেনাকাটাতে একটি রেওয়াজ রয়েছে। এখানে জামাইকে মেলার বাজার করতে হয়। অনেক গরিব জামাইকে শ্বশুরই টাকা দেন মেলার বাজার করতে। জামাইরা মেলাতে গিয়ে বড় মাছসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বাজার করেন শ্বশুরবাড়ির জন্য।
বুধবার তন্নীবাজার গ্রামের এক জামাই জানান, মেলায় এসে তিনি ৩ হাজার টাকা দিয়ে বাঘাইড় মাছ কিনেছেন। এছাড়া শ্যালক এবং শ্যালিকার জন্য মিষ্টি মিঠাইতো আছেই। মেলাতে আসতে পেরে তিনি বেশ খুশি।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলা গাড়ীদহ নদী ঘেঁষে প্রতিবছর এ পোড়াদহ মেলা বসে মাঘ মাসের শেষ বুধবার। কথিত রয়েছে প্রায় ২০০ বছর আগে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সন্ন্যাসীরা বগুড়ার গাবতলী উপজেলার গাড়ীদহ নদী ঘেঁষে আস্তানা গাড়েন। এর প্রায় ৫০ বছর পর স্থানীয়রা এখানে সন্ন্যাসী পূজার পাশাপাশি গোড়াপত্তন করেন ঐতিহ্যবাহী এই মেলার।
সেই থেকে বর্তমানে এ মেলাটির সর্বজনীন মেলা হিসেবে বগুড়াসহ আশপাশে জেলায় বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। সব জাতি বর্ণের মানুষ আসেন এ মেলায় কেনাকাটা করার জন্য।
এক সময় এই মেলার পরিধি ছিল প্রায় একশ একর জমির উপর। সরকারি সামান্য জমির পাশাপাশি আশপাশের জমি কয়েকদিনের জন্য লিজ নিয়ে মেলা কমিটি বড় পরিসরে মেলা বসাতেন। কালের বিবর্তনে মেলার আয়তন কমতে কমতে এখন পঞ্চশ একরে কম এসে ঠেকেছে। তবে মেলা নিয়ে আগ্রহ উৎসবের কমতি নেই এলাকাবাসীর।
মেলার অয়োজক কমিটির সভাপতি মহিষাবান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, মেলা যাতে নির্বিঘ্নে চলে সে লক্ষ্যে প্রশাসনসহ এলাকাবাসী সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করে। একদিনের মেলা হলেও পরদিনও এই মেলা চলে।
সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ