মৌখিক অনুমতিতে নির্মাণের পরও চা শ্রমিকের নির্মিত পাকাঘর ভেঙ্গে দিয়েছে মালিকের ভাড়াটেরা

প্রকাশিত: ৬:৩৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
ছবি ধলাইর ডাক

স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানে এক চা শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থাপকের অনুমতি নিয়ে নিজস্ব অর্থে পাকা ঘর নির্মাণ করেছিলেন। চা শ্রমিকরা সবাই কাজে যোগ দিলে চা বাগান মালিকের নির্দেশে আবার ব্যবস্থাপক শ্রীপুর গ্রামের ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এসে নির্মিত পাকা ঘরটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলেন। এ অমানবিক ঘটনার শিকার চা শ্রমিক শ্রীজনম ভর (৫৫)। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের বা আগাম কোন নোটিশ না দিয়ে শনিবার সকাল ১০টায় অতর্কিতে এসে পাকা ঘরটি ভেঙ্গে ফেলা হয়।
ঘটনায় শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানে সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনায় শনিবার বিকেলে কমলগঞ্জে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিযনের মনু-ধলই ভ্যালির কার্যকরি কমিটির জরুরী বৈঠক বসেছে। নির্যাতিত চা শ্রমিক শ্রীজনম ভর বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মহসীন টি কোম্পানীর চা বাগান শ্রীগোবিন্দপুর। ব্যক্তি মালিকানাধীন চা বাগানে বসত ঘর নির্মাণের দাবি করলেও অতি সহজে ঘর পাওয়া যায় না। তাই চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সহযোগিতায় বাগানের ব্যবস্থাপক প্রশান্ত সরকারের কাছে মৌখিকভাবে আবেদন করে তার মৌখিক অনুমতি নিয়ে ধার দেনা করে ২ লাখ টাকা ব্যয় করে ছোট পাকা ঘরটি নির্মাণ করেছিলেন। শনিবার সকালে সকল শ্রমিক কাজে যোগ দিলে সকাল ১০টায় অতর্কিতে শ্রীপুর গ্রামের ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এসে ব্যবস্থাপক প্রশান্ত সরকার উপস্থিত থেকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলেন নির্মিত ঘরটি।
শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মিলন নায়েক বলেন, ব্যবস্থাপকের মৌখিক অনুমিতেই পাকা বসত ঘর নির্মাণ করেছিলেন। এখন আবার চা বাগানের মালিক মহসীন মিয়ার নির্দেশে ব্যবস্থাপক ভাড়াটে লোকজন এনে এ ঘরটি ভেঙ্গে দিলেন। তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে তারা এখন চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভ্যালি কমিটির কার্যালয়ে জরুরী বৈঠকে বসেছেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নে মনু-ধলই ভ্যালির কার্যকরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা বলেন, শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের মালিকের নির্দেশে ব্যবস্থাপক যে কাজটি করেছেন তা ঘৃনিত ও অমানবিক কাজ। তারাতো আগাম নোটিশ দিয়ে তাকে সতর্ক করে সময় বেঁধে দিয়ে ঘরটি ভাঙ্গতে পারতেন।
শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক প্রশান্ত সরকার বলেন, শ্রীজনম ভরকে ঘর নির্মাণের কোন মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার ঘরে গিয়ে আগাম বলা হয়েছে ঘর ভাঙ্গার বিষয়টি। তাছাড়া সেতো এখানে একটি দোকান ঘর নির্মাণ করেছিল। বসতঘর হলেতো কিছু মানবিক বিষয় থাকে। চা বাগানে দোকান ঘর নির্মাণের কোন সুযোগ নেই।