ধলাই ডেস্ক: করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউন যে মানুষকে শুধু তিক্ততার স্বাদই দিয়েছে তা নয়, বরং কারো কারো ভাঙা সম্পর্ক জোড়াও লাগিয়েছে, কিংবা নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটলো পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে।
লকডাউনে রাস্তার পাশে প্রতিদিন খাবার দিতে যেত একটি ছেলে। খাবার দিতে গিয়ে সেই অসহায় মুখগুলোর ভিড়েই হঠাৎ একটি মুখ খুব চেনা হয়ে উঠলো ছেলেটির। অপরদিকে ঘরে খাবার নেই মেয়েটির। তাই খাবারের আশায় অপেক্ষা করতো মেয়েটি। ত্রাণ দিতে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে আলাপ হয় ছেলেটির। প্রথমে বন্ধুত্ব, এরপর প্রেম। শেষ পর্যন্ত সেই প্রেম গড়ায় বিয়েতে।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি ভারতের কানপুরে ঘটেছে। ছেলেটির নাম অনিল। পেশায় গাড়িচালক। আর মেয়েটির নাম নীলাম।
জানা গেছে, নীলামের বাবা মারা গিয়েছে বছর খানেক আগে। তার ভাই ও ভাবি খুব অত্যাচার করতো তাকে। এক রাতে নীলাম আর ওর মা’কে বাড়ি থেকে বের করে দিল তারা। কোথাও ওদের দু’জনের মাথা গোঁজার ঠাঁই হল না। এদিকে তার মা প্যারালাইজড। খোলা রাস্তার পাশেই কোনো মতে দিন কেটে যেত তাদের। কোনো রকমে এদিক-ওদিক করে রাস্তার দোকানে কাজ করে খাবারটা জুটে যাচ্ছিলো। কিন্তু লকডাউনে চরম বিপদে পড়ল মা-মেয়ে। ভিক্ষা করা ছাড়া অন্য কোনো পথ রইলো না। অগত্যা কানপুরের কাকাদেওয়ের নীর-শীর ক্রসিংয়ে ঠাঁই হল ওদের। সেখানেই অনিলের সঙ্গে নীলামের আলাপ হয়। অনিল রোজ দুস্থদের খাবার দিতে যেত। নীলামকে দেখে ভালো লেগে যায় অনিলের। এরপর থেকে নিজে হাতে রেঁধে মা-মেয়ের জন্য খাবার নিয়ে যেতো অনিল। এরইমধ্যে নীলামকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েই বসল অনিল।
সম্প্রতি কানপুরের লর্ড বুদ্ধা আশ্রমে নীলম-অনিলের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। লকডাউনের নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই বিয়ে হয় তাদের। অনিলের বন্ধু লাল্টা প্রসাদ অনিলের বাবাকে রাজি করালেন এই বিয়ের জন্য মত দিতে। লাল্টা নিজেও খাবার দিতে যেতেন সেখানে।