ডেস্ক রিপোর্ট: ১৩ বছর বয়সে গ্রেফতার হওয়া সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের কিশোর মুর্তাজা কুরেইরিসের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়েছে। তার মৃত্যুদণ্ড বাতিলের বিষয়টি রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন সৌদির এক কর্মকর্তা। তিনি জানিয়েছেন, শিয়া সম্প্রদায়ের এই কিশোরকে ২০২২ সালের মধ্যে মুক্তি দেয়া হতে পারে।
২০১১ সালে আরব বসন্তের উত্তাল সময়ে সৌদি রাজতন্ত্রের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের দাবিতে সেসময় দেশজুড়ে যে গণবিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল, তার অংশ হিসেবেই মুর্তাজা কুরেইরিস বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে সাইকেল রাইডে নেমেছিল। এই অল্পবয়সী বালকদের জড়ো হওয়ার বিষয়টি সেসময় ‘পর্যবেক্ষণ’ করে সৌদি সরকার। ওই বিক্ষোভে অংশ নেয়ার কারণে তিন বছর পর মুর্তাজাকে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ১৩ বছর বয়সে গ্রেফতার করা হয়।
পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ বাহরাইনে চলে যাওয়ার সময় সীমান্তে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী ‘রাজনৈতিক বন্দী’ হিসেবে মুর্তাজাকে নিয়ে যাওয়া হয় কারাগারে।
প্রায় চার বছর ‘বিচার-পূর্ব কারাভোগের’ পর এখন মুর্তাজাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করতে চাচ্ছিল সৌদি সরকার। মুর্তাজাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করতে আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। মুর্তাজার বিরুদ্ধে যে অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছে, সে অনুসারে ‘অপরাধ সংঘটনের সময়’ তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সৌদির ওই কর্মকর্তা জানান, মুর্তাজাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে না। এদিকে, চলতি মাসে মুর্তাজা কুরেইরিসকে মুক্তি দেয়ার জন্য দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গত বছরের অক্টোবরে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা এবং গত কয়েক মাস ধরে দেশটির বেশ কয়েকজন নারী মানবাধিকার কর্মীকে আটকের ঘটনায় সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে সৌদি।
গত এপ্রিলে সন্ত্রাসী অপরাধের দায়ে ৩৭ জনের শিরশ্ছেদ করেছে সৌদি। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, এদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষ। তারা সঠিক বিচার পাননি বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।