স্বামীর লাশ রান্নাঘরে চাপা দিয়ে আড়াই মাস ‘আগুন জ্বালান’ স্ত্রী

প্রকাশিত: ৩:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২১
সংংগৃহীত

ধলাই ডেস্ক: পরকীয়ার কথা জেনে যাওয়ায় প্রথমে স্বামীকে হত্যা করেন। এরপর লাশ চাপা দেন রান্নাঘরের মাটির নিচে। স্বামীকে চাপা দেওয়া মাটির ওপরই রয়েছে চুলা। সেখানে বসেই সব ধরনের রান্নাবান্না করতেন স্ত্রী। তাও আবার আড়াই মাস ধরে। শেষমেশ পুলিশের জালে আটকা পড়লেন পাষণ্ড স্ত্রী। সঙ্গে ধরা পড়েন তার সহযোগীও।

ঘটনাটি মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার রমজানবেগ এলাকার। নিখোঁজের প্রায় আড়াই মাস পর ৫০ বছর বয়সী আরাফাত মোল্লার মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে নিজ বাড়ির রান্নাঘরের মাটির নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আকলিমা বেগম ও তার সহযোগী মো. রিয়াজকে আটক করা হয়েছে। নিহত আরাফাত মোল্লা রমজানবেগ এলাকার দুখু মাদবরের ছেলে। তিনি শহর বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, রান্নাঘরের মাটির নিচে স্বামীর লাশ চাপা দিয়ে চুলায় প্রতিদিন সংসারের সব রান্না করতেন আকলিমা। স্বামী নিখোঁজের অভিযোগ এনে নিজেই থানায় জিডি করেন। পরবর্তীতে মামলাও করেন স্ত্রী। এরপর আরাফাত মোল্লার খোঁজে মাঠে নামে পুলিশ। তবে আকলিমাকে নিয়ে সন্দেহ ছিল তাদের।

আকলিমার পেছনে একজন সোর্সও লাগান মামলার তদন্তে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা। একপর্যায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ওই সোর্সের সঙ্গে কথা বলেন আকলিমা। হঠাৎ নিজের অজান্তেই স্বামীকে হত্যার কথা বলে ফেলেন। আকলিমার সঙ্গে কথা বলার দৃশ্য গোপনে মুঠোফোনে ধারণ করেন পুলিশের ওই সোর্স। পরে ভিডিওর ভিত্তিতে একইদিন বিকেল ৫টার দিকে আকলিমাকে আটক করে পুলিশ। এরপর তার দেওয়া তথ্যমতে নিজ বাড়ির রান্নাঘরের মাটির নিচে থেকে আরাফাত মোল্লার লাশ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকলিমা জানান, রিয়াজের সঙ্গে তার প্রেম চলছিল। বিষয়টি তার স্বামী জানতে পারেন। পথের কাঁটা সরাতে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী আরাফাত মোল্লাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘুমন্ত স্বামীকে হত্যা করেন। পরে লাশ গুম করতে রান্নাঘরের মাটির নিচে চাপা দেন। এসব কাজে তাকে সহযোগিতা করেন রিয়াজ।

এডিশনাল এসপি (সদর সার্কেল) মিনহাজ উল-ইসলাম জানান, ২ মে সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্বামী আরাফাত মোল্লা নিখোঁজ হন মর্মে পরদিন সদর থানায় জিডি করেন আকলিমা। এরপর তাকে খুঁজতে থাকে পুলিশ। পরবর্তীতে ৩০ মে দ্বিতীয় দফায় মামলা করেন আকলিমা। মামলাটি পুলিশ বিভিন্নভাবে তদন্ত করতে থাকে। অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন নিহতের স্ত্রী নিজেই।