ধলাই ডেস্ক: দীর্ঘ ৫৫ বছরের অপেক্ষার পালা শেষ। আরো একটি উন্নয়নের মাইলফলক সৃষ্টি করল বাংলাদেশ। রচিত হলো নতুন ইতিহাস। দীর্ঘ ৫৫ বছর পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে চালু হলো ট্রেন চলাচল।
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি রেল রুটের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে রেলপথ চালুর মাধ্যমে এ অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হলো। এর ফলে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে এই অঞ্চলের মানুষ। ফিরে আসবে কর্মচাঞ্চল্য আর আর্থিক সচ্ছলতা।
সরেজমিন দেখা যায়, চিলাহাটি রেল স্টেশনে ওয়াগনের একটি মালগাড়ির ইঞ্জিনের সামনে লাগানো হয়েছে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি। ফুল ও রঙিন কাপড়ে সাজানো হয়েছে ইঞ্জিন ও গার্ডের কামরা। এর পাশাপাশি চিলাহাটি রেলস্টেশন চত্বরকে অপরূপ রূপে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের নামফলক। উদ্বোধনের জন্য দৃষ্টিনন্দন বর্ণিল সাজে সজ্জিত ইঞ্জিন আর ৩০টি খালি র্যাক প্রস্তুত রাখা হয়।
নতুন রেলপথ স্থাপনসহ ভিআইপি গেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ করা হবে চিলাহাটি হাইটেক মডেল স্টেশন, দোতালা অফিস কক্ষ, স্টাফদের আবাসন ব্যবস্থা, কাস্টম হাউজ আর ইমিগ্রেশন অফিস।
১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর নীলফামারীর উত্তর সীমান্ত চিলাহাটি এবং ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে দার্জিলিং পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায় রেলপথ।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এ রেলপথ চালু হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো উচ্চতায় স্থান পাবে। পাশাপাশি দুই দেশের জনগণ উপকৃত হবে। প্রসার ঘটবে ব্যবসা বাণিজ্যের। উন্মোচিত হবে আর্থ-সামাজিক অবস্থার নতুন দ্বার। পণ্যবাহী ট্রেনের পাশাপাশি মহান স্বাধীনতা দিবসে যাত্রীবাহী ট্রেন ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত চালু করা হবে।
চিলাহাটি এলাকার বাসিন্দা ফারহানা আখতার সুমি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করলে আমরা আরো অনেক উপকৃত হবো। ফলে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। উন্নতি হবে আর্থ-সামাজিক অবস্থার।
এর আগে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনারসহ একাধিক কর্মকর্তা উদ্বোধনের প্রস্তুতি দেখার জন্য চিলাহাটি রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন।
চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবেন দুই দেশের মানুষ। আগে এই অঞ্চলের মানুষদের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হতো ফলে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো ব্যবসায়ীরা। এখন চিলাহাটি দিয়ে পণ্য গেলে অর্থ সাশ্রয় ঘটবে ব্যবসায়ীদের।