৫ টাকায় ঈদের পোশাক!

প্রকাশিত: ২:৪৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ১, ২০১৯

ডেস্ক রিপোর্ট: ঈদে পরার জন্য ৫ টাকা দিয়ে নতুন জামা কিনেছে যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী লিমা ও প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া আরাফাত। নিজের পছন্দমত জামা পেয়ে খুশির ঝিলিক তাদের চোখে-মুখে।

লিমার বাবা দিনমজুর, আরাফাতের বাবা হোটেলের কর্মচারী। স্থানীয় এক বড় ভাই তাদের জানিয়েছিলেন, শুক্রবার সকালে ৫ টাকায় শিশুদের পোশাক কিনতে পাওয়া যাবে। সেই খবরে সকাল ১০টার মধ্যে তারা পৌঁছায় শহরের পৌর উদ্যানে চারুপীঠ চত্বরে। এরপর যখন বিক্রয় শুরু হয় সবার আগে এ দুইজন নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী জামা ও পাঞ্জাবি কেনে নগদ ৫ টাকায়।

‘আগে আসলে আগে পাবে’ ভিত্তিতে সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ কেনাবেচা দুপুরেই শেষ হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুসহ বয়স্করা ৪০০ নতুন পোশাক ক্রয় করেন। পোশাক বিক্রি থেকে প্রাপ্ত টাকা পরে সেখানে আগত দরিদ্র মানুষের মাঝে বণ্টন করা হয়।

খবর পেয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে ঈদের নতুন পোশাক কিনতে এসেছেন সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া এলাকার গৃহবধূ নাসিমা বেগম। ছেলে শাহজাহান (১২) আর মেয়ে লামিয়ার (৭) জন্যে পাঞ্জাবি আর কামিজ কেনেন তিনি।

নাসিমা বেগম বলেন, এখনও ঈদের বাজার করিনি। স্বামী দিনমজুর, আয় রোজগার তেমন না। ৫ টাকায় বাচ্চাদের কাপড় বিক্রির সংবাদ শুনে এসেছি। ভেবেছিলাম কী জানি কী দেবে! এখন দেখছি, খুবই সুন্দর সুন্দর জামা-কাপড় বিক্রি করা হচ্ছে। ৫ টাকায় এতো সুন্দর জামা-কাপড় পাওয়া যাবে ভাবতেই পারিনি।

ঈদে এ অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে মাত্র ৫ টাকায় ঈদের নতুন পোশাক দেয়ার উদ্যোগ নেয় ফোঁড় নামে যশোরের একটি ফ্যাশন হাউজ। প্রতিষ্ঠানটি তাদের দোকানের পণ্যই বিক্রি করেছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কাছে। বিশেষ করে দুই বছর থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত শিশুদের ফ্রক, সালোয়ার কামিজ, টপস, পাঞ্জাবি ও পায়জামা এবং বড়দের জন্যে পাঞ্জাবি বিক্রি করা হয়। এসব পোশাক ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে ফোঁড়ের শো-রুমে। দামি এসব পোশাক নামমাত্র মূল্যে কিনতে পেরে খুশি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অভিভাবকরা।

ফোঁড় ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী চারুপীঠের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ বলেন, শিশুরা যাতে এই পোশাকগুলো দান মনে না করে তার জন্য ৫ টাকা মূল্য নির্ধারণ করেছি। এতে করে তাদের অংশীদারিত্ব থেকে যায়। তারা কোনো প্রকার হীনমন্যতায় ভুগবে না। সাধ্য অনুযায়ী ঈদ উৎসবকে কিছু মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এই প্রয়াস। আগামীতেও এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।