ধলাই ডেস্ক: বাংলাদেশে আঙুর চাষ অসম্ভব। কৃষি কর্মকর্তার এমন কথাকে ভুল প্রমাণ করলেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার মামা-ভাগ্নে। তারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন এদেশেও বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ সম্ভব।
দেশে নতুন দ্বার উন্মোচনের এ মামা হলেন আমিরুল ইসলাম। তার ভাগ্নের নাম তরিকুল ইসলাম।
মামা-ভাগ্নের দাবি, বেকার যুবকেরা অল্প জমিতে আঙুর চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন। আঙুর চাষেই ঘুরতে পারে অনেক বেকার যুবকের ভাগ্যের চাকা।
মামা আমিরুল ইসলাম বলেন, এক বছর আগে বাণিজ্যিকভাবে অঙুর চাষে জন্য উদ্ভদ্ধ হয়ে আমি ভারতে যাই। ভারতের মোম্বায়ের নাছিকের আঙুর বাগানে চাষ প্রণালী সর্ম্পকে জানি। ভাগ্যের চাকা ঘুরানোর আশায় ভারতের কলকাতার এক ট্রাকচালকের মাধ্যমে ২৫টি আঙুরের চারা কিনে দর্শনা স্থল পথে দেশে নিয়ে আসি। চার দিন সংরক্ষণে রেখে গাছগুলো রোপণ করি আমার ৫ কাঠা জমির উপর। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতা চাইলে তিনি বাগানে আসেননি।
পরবর্তীতে চারটি আঙুর গাছের চারা মারা যায়। এরপর আমি কৃষিতে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ভাগ্নে তরিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের প্রচেষ্টায় আঙুর গাছগুলোর পরিচর্যা শুরু করি। ছয় মাস পরে কয়েকটি গাছে কিছু আঙুর ফল আসে। অল্প ফল ধরায় হতাশ না হয়ে ভারতীয় আঙুর চাষির পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী বছরের জন্য আবার পরিচর্যা শুরু করি। এ বছর আঙুর গাছের মাচাই গাছগুলোর ডালে ডালে থোকায় থোকায় আঙুরে ভরে গেছে। আঙুরের পরিপক্কতা এসেছে। আঙুরের একটি গাছে প্রায় ২০ থেকে ৩০ কেজি ফল পাব।
তিনি আরো বলেন, দুই বিঘা জমিতে আঙুর চাষ করলে তাতে চারা কিনা থেকে পরিচর্যা শেষে ফল পাওয়া পর্যন্ত খরচ হবে মাত্র ১ লাখ টাকা। ফলন ভালো হলে বছর শেষে প্রায় ৮-১০ লাখ টাকার আঙুর বিক্রি করতে পারব। আঙুর চাষে বেকার যুবকরা এগিয়ে এলে তার বেকারত্ব ঘুচবে।
আঙুর চাষের সফলতার গল্প শুনে দর্শনাসহ আশপাশের এলাকার থেকে মানুষ গাছের থাকা আঙুর দেখতে মামা-ভাগ্নের বাগানে ভিড় জমাচ্ছে। আঙুর বিদেশি ফল হয়েও দেশের মাটিতে দর্শনায় দেখে হতবাক।
আঙুর চাষে সফলতার খবর শুনে দর্শনায় আঙুর বাগানে ছুটে আসেন দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মনিরুজ্জামান । তিনি বলেন, মামা-ভাগ্নের বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষের সার্বিক সহোযোগিতা করবে কৃষি অফিস।
এদিকে বাংলাদেশে আঙুরের সফল চাষের কথা শোনে চমকে গেছেন চুয়াডাঙ্গার কৃষি অফিসার আলী হাসান।
এ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে আঙুর চাষ অসম্ভব। এখন দর্শনাতে লকডাউন আছে। ওইখানে যাওয়া যাবে না।