ধর্ম ডেস্ক: এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে বড় গির্জা থেকে মসজিদ পরে জাদুঘরে রূপান্তরিত হওয়া দেড় হাজার বছরের পুরনো হায়া সোফিয়াকে সম্প্রতি আবারও মসজিদে রূপান্তর করা হয়েছে। তুরস্কের ঐতিহাসিক এই মসজিদে শুক্রবার ৮৬ বছর পর প্রথমবারের মতো হাজারও মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করছেন।
বহুল আলোচিত এই মসজিদে এক হাজার মুসল্লির ধারণ ক্ষমতা থাকলেও উদ্বোধনী দিনে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য এর আশপাশের এলাকায় হাজার হাজার মানুষ অবস্থান নেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলের গভর্নর আলী ইয়ালিকায়া বলেন, মুসলিমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, উদ্বোধনের সময় সবাই সেখানে অংশ নিতে চান।
প্রায় দেড় হাজার বছর আগে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের প্রধান গির্জা (ক্যাথেড্রাল) হিসেবে হায়া সোফিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। কয়েক শতাব্দী পর অটোমান শাসকরা এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। ১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষ তুর্কি সরকার। ১৯৮৫ সালে জাদুঘর হায়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা ঘোষণা করে ইউনেস্কো।
গত ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত হায়া সোফিয়াকে জাদুঘরের মর্যাদা বাতিল করে মসজিদে রূপান্তরের আদেশ দেন। মসজিদ ছাড়া অন্যকিছু হিসেবে এটির ব্যবহারকে অবৈধ বলেও জানান আদালত।
পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই স্থাপনাকে মসজিদে রূপান্তরে আদালতের সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়ে ২৪ জুলাই প্রথম জুমার নামাজের জন্য মসজিদটি খুলে দেয়ার ঘোষণা দেন।
তুরস্কের সরকারি সংবাদসংস্থা আনাদোলু বলছে, নামাজের আগে নিরাপত্তা তল্লাশি পেরিয়ে এক হাজার মুসল্লি মসজিদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি পান। তবে হাজার হাজার মানুষ মসজিদটির আশপাশের এলাকা ও রাস্তায় জুমার নামাজে অংশ নেন। নামাজে অংশ নিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান-সহ দেশটির সরকারের ঊর্ধ্বতন আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
এরদোয়ান বলেছেন, প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরনো হায়া সোফিয়া মুসলিম, খ্রিস্টান এবং বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। যা এক সময় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বিশ্ব ঐতিহ্যের এই স্থাপনাকে মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্তে দেশের ভেতরে এবং বাইরে তুর্কি প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেন অনেকে। সমালোচনার জবাবে এরদোয়ান বলেন, হায়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরে তুরস্ক সার্বভৌম অধিকারের চর্চা করেছে।