ডেস্ক রিপোর্ট: সুস্থ ও প্রাপ্ত-বয়স্ক কেউ রোজা না রাখলে ধরে ধরে কারাগারে পাঠাচ্ছে মালয়েশিয়া পুলিশ। এ ছাড়া এ আইনে ২৫০ ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির স্থানীয় পত্রিকা দ্য নিউ স্ট্রেইটস টাইমসে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে।
মালয়েশিয়ায় শুধু মসলমান বাস করে না। এখানে বহুজাতিক ধর্মের লোকজনের বসবাস। এ ধরনের হঠকারি সিদ্ধান্তে ‘অপমানজনক’ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির অধিকার রক্ষা আন্দোলনকারীরা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়ায় লোকাল কাউন্সিলের ৩২ জন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা অভিযান পরিচালনা করছেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা ছদ্মবেশে খাবারের দোকানগুলোতে নজরদারি চালাচ্ছেন।
দ্য নিউ স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মালয়েশীয় মুসলমানরা ঐতিহ্যগতভাবে ইসলামের সহনশীল রূপ অনুসরণ করে আসছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, সম্প্রতি দেশটির রক্ষণশীল মনোভাব বিস্তার লাভ করেছে।
অভিযান দলের সদস্যরা মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় জোহর স্টেটের সেগামাত জেলার ১৮৫টি খাবারের দোকানে ছদ্মবেশে কাজ করবেন। ওই অঞ্চলের জনপ্রিয় খাবার আইটেম ভালো রান্না করতে পারেন এমন দুইজন কর্মকর্তা কাজ করবেন এক একটি দোকানে। এরপর রোজা রাখেননি এমন কেউ খাবারের অর্ডার দিলেই ধরা হবে তাদের।
সেগামাত পৌর কাউন্সিলের সভাপতি মোহাম্মদ মাসনি ওয়াকিমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা বিশেষ কর্মকর্তা নির্বাচিত করেছি যাদের গায়ের রং কালো। কেননা, এখানে কালোরাই এই পেশায় বেশি নিয়োজিত।
তিনি বলেন, ‘ছদ্মবেশী কর্মকর্তারা ইন্দোনেশিয়ান ও পাকিস্তানি ভাষাও ভালো বলতে পারেন যাতে রেস্টুরেন্ট বা খাবারের দোকানে আগতরা বিশ্বাস করে তারা সত্যিকার কুক বা ওয়েটার।
দেশটিতে সিস্টারস ইন ইসলাম নামের একটি সংগঠন সেখানকার মুসলমান নারীদের অধিকার রক্ষায় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। সংগঠনটি রোজা নিয়ে বিদ্যমান আইনকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি করছি, এই ধরনের লজ্জাজনক গুপ্তচরবৃত্তি বন্ধ করার জন্য। এই ঘটনা অন্য ধর্মের মানুষের কাছে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেবে।’
৬০ মিলিয়নেরও বেশি অধিবাসী মালয়েশীয় মুসলমান এবং ৬০ শতাংশেরও বেশি সংখ্যক চীনা ও ভারতীয় যারা মুসলমান নয়।