কমলগঞ্জ সংবাদদাতা : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে গত এপ্রিল মাসে ১০ দিনের ব্যবধানে দুটি আগর গাছ কেটে চুরির পর গত (১৬ মে) রাতে বনকর্মীদের আটকে রেখে আগর গাছ চুরির মত ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনার পর বনকর্মী ও সিপিজি সদস্যদের মাঝে সৃষ্ট বিবাদে ও মারধরের মত ঘটনায় সু-পরিকল্পিতভাবে এ আগর গাছ চুরির তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। এর প্রেক্ষিতে বন বিভাগ চারজন সিপিজি (কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ) সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। কমলগঞ্জের বাঘমারা বন ক্যাম্পের বনকর্মীদের ঘরে আটকে রেখে গত (১৬ মে) রাতে একটি আগরগাছ কেটে খন্ডাংশ করে নিয়ে গিয়েছিল চোর চক্র। পরদিন শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায়, মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ আগর গাছ চুরির তথ্য উদঘাটনে জোর তৎপরতা শুরু করে। তদন্তে বেরিয়ে আসে আগর গাছ চুরির মূল তথ্য। জানা গেছে- ঘটনার দিন রাতে বাঘমারা বন ক্যাম্পে আটক থাকা কর্মী মোক্তার আলীর সাথে সিপিজি সদস্য মহসিন মিয়া ও সুফি মিয়ার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের এক পর্যায়ে সুফি মিয়া বনকর্মী মোক্তার মিয়াকে মারধর করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বনকর্মী জানান, সিপিজি সদস্য সুফি মিয়ার ভাই আলাল মিয়া এ আগর গাছ চুরির সাথে যুক্ত। বনকর্মী মোক্তার আলী ও মহসিন মিয়ার সাথে আগরগাছ চোরদের মুঠোফোনে একাধিকবার কথা হয়েছে। এ কথোপকথনের অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে। ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা যায়, এর আগে ১০ দিনে লাউয়াছড়া বন বিশ্রামাগারের সামন ও রেলপথের ধার থেকে দুটি আগার গাছ চুরি হয়েছিল, তার সাথেও জড়িত ছিল অসাধু বনকর্মী ও সিপিজি সদস্যদের একটি অংশ। জাতীয় উদ্যান সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এসব তথ্য প্রকাশ পায়। সভায় জানানো হয়- মুঠোফোনের অডিও রেকর্ড জব্দ করা হয়েছে। সাথে সাথে বনকর্মী মোক্তার আলীকে মারধর করায় চার সিপিজি সদস্য মহসিন মিয়া, সুফি মিয়া, সেলিম মিয়া ও জহির মিয়াকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সহ ব্যবস্থাপনা কমিটি সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
বরখাস্ত হওয়া সিপিজি সদস্য মহসিন মিয়া বলেন- জাতীয় উদ্যানের বেত নিয়ে বনকর্মী মোক্তার মিয়ার সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সুফি মিয়া মোক্তার মিয়াকে প্রহার করেছিল। এ ঘটনায় তাদের চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিজি সদস্য বলেন এ বনের গাছ চোরদের সাথে অনেক বনকর্মীর সখ্যতা রয়েছে।
মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. আনিসুর রহমান বলেন- বাঘমারা বন ক্যাম্প এলাকা থেকে সম্প্রতি চুরি হওয়া আগর গাছ নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের হয়েছে। তবে এ মুহুর্তে তা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। এতে বনকর্মী ও বা সিপিজি সদস্য জড়িত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।