ধলাই ডেস্ক: পাবনার সাঁথিয়ায় স্ত্রী কানিজ ফাতেমাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে স্বামী রাকিবুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীকে হত্যা করে নদীর ক্যানেলে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রেখেছিলেন রাকিবুল। শনিবার সকাল ১০টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃত ফাতেমা খাতুন বেড়া পৌর সদরের শম্ভুপুর মহল্লার আব্দুল কাদেরের মেয়ে। আটক রাকিবুল ইসলাম সাঁথিয়া পৌর সদরের ফেছুয়ান মহল্লার চাঁদু শেখের ছেলে।
পাবনার এএসপি মাসুদ আলম পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, ৭-৮ মাস আগে রাকিবুলের সঙ্গে বিয়ে হয় ফাতেমা খাতুনের। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও পারিবারিক কলহ চলছিল। গত ২৮ এপ্রিল স্ত্রী ফাতেমাকে তার বাবার বাড়িতে রেখে যায় রাকিবুল। ঈদের আগে নিয়ে যাবার কথা ছিল। এর মধ্যেই স্ত্রীকে হত্যার ছক কষতে থাকেন রাকিবুল। ঈদের আগেরদিন সন্ধ্যার পর বেড়ানোর কথা বলে মোবাইল ফোনে স্ত্রী ফাতেমাকে বাড়ির বাইরে বের হতে বলেন রাকিবুল। তবে তার বাইরে বের হওয়ার কথা তার পরিবারের কাউকে বলতেও নিষেধ করেন।
পরে স্বামীর ডাকে সাড়া দিয়ে ফাতেমা বাইরে বের হলে তাকে মোটরসাইকেলে নিয়ে সাঁথিয়া উপজেলার তলট ব্রিজের কাছে নিয়ে যান। সেখানে নিরিবিলি জায়গা পেয়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার করার কথা বলে স্ত্রীকে দাঁড় করিয়ে রেখে একটু দূরে সরে যান। কিছুক্ষণ পর পেছন থেকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্ত্রী ফাতেমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন রাকিবুল। পরে রাস্তার পাশে ইছামতি নদীর ক্যানেলে কচুরিপানার নিচে ফাতেমার লাশ লুকিয়ে রেখে বাড়ি চলে যান তিনি। যাওয়ার আগে স্ত্রী ফাতেমার মোবাইল ফোন থেকে ‘আমাকে মাফ করো, অন্য একটি ছেলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে, তাই চলে গেলাম’ এই কথা লিখে নিজের ফোনে ও ফাতেমার ভাইয়ের ফোনে মেসেজ পাঠান রাকিবুল।
মেয়ের খোঁজ না পেয়ে বাবা আব্দুল কাদের শুক্রবার বেড়া থানায় একটি জিডি করেন। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমে স্বামী রাকিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি পুলিশকে তার স্ত্রীর মেসেজের কথাও জানান। এরপরই সন্দেহ হয় পুলিশের।
শুক্রবার রাতে স্বামী রাকিবুলকে আটক করে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করার একপর্যায়ে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্য মতে, শনিবার সকালে নদীর ক্যানেল থেকে ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
হত্যার কারণে সম্পর্কে মাসুদ আলম জানান, আটক রাকিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদে যেটুকু মনে হয়েছে বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। এ নিয়ে মনোমালিন্য ও সাংসারিক অস্থিরতা ছিল। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চেয়েছিলেন রাকিবুল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।