আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ব্রাজিলে মহামারি করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছে দুই হাজার ২৪৭ জন। শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৮২ হাজার নতুন রোগী।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত এক সপ্তাহে দেশটিতে দৈনিক ৭০ হাজার মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। চলতি বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় চার মাস ধরে ব্রাজিলে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর গড় দেড় হাজারের বেশি।
এরইমধ্যে দেশটিতে মহামারি পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে বলে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। কারণ হিসেবে তারা বলছেন করোনা প্রতিরোধী টিকা কর্মসূচির ধীরগতি ও শীতের মৌসুম এগিয়ে আসতে থাকার কথা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্সেলো কুইরোগা শোকাতুর লাখো পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
তিনি লিখেন, যারা মারা গেছেন, তাদের বাবা, মা, বন্ধুবান্ধব ও স্বজনদের প্রতি আমার সহমর্মিতা রয়েছে। মহামারির কারণে পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু ব্রাজিলের জন্য ভীষণ দুঃখের।
সম্প্রতি নতুন করে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও ছোঁয়াচে ভাইরাসটির বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি আরোপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ফিওক্রুজ জানিয়েছে, পরিস্থিতি গুরুতর। টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন ব্রাজিলের প্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র ১৫ শতাংশ।
মহামারির দেড় বছর পর দেশটিতে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বলসোনারোর প্রশাসন কীভাবে সামলাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধান শুরু করেছে ব্রাজিলের কংগ্রেস।
মহামারি নিয়ন্ত্রণে জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতা, টিকা-লকডাউন-স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ দেখিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট।
সে অবস্থান থেকে তিনি অনেকটা সরে এলেও বিরোধীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণে টিকা কিনতে দেরি করেছেন বলসোনারো। মহামারিকে গুরুত্বের সঙ্গে না নিয়ে পরিস্থিতিকে আরও সংকটজনক করে তুলেছেন তিনি।
করোনাভাইরাসের ক্রমাগত রূপ পরিবর্তন এবং একের পর এক অধিক সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টের কারণে ব্রাজিলে মহামারি নতুন গতিতে বাড়ছে। এর মধ্যে আছে আমাজন বনাঞ্চলে প্রথম শনাক্ত করোনার গামা ভ্যারিয়েন্ট। দেশটির বেশিরভাগ রাজ্যের হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যার তুলনায় রোগী ভর্তির হার ৮০ শতাংশের বেশি।
দক্ষিণ গোলার্ধ্বে আগামী সপ্তাহ থেকে শীতের মৌসুম শুরু হতে যাওয়ায় সামনের দিনগুলোতে করোনার সংক্রমণ আরো বাড়বে বলে শঙ্কা বাড়ছে বলে জানা গেছে।